মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ড বিতরণ বামনায় অ্যাকাউন্ট খোলার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ১১:৫৫ এএম, ৬ ডিসেম্বর ২০১৮

এই ছবিটি প্রতীকিবামনা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জাফরিন জাহানের বিরুদ্ধে মাতৃত্বকালীন ভাতায় অনিয়ম ও মাতৃত্বকালীন ভাতার উপকারভোগী গর্ভবতীতের ব্যাংক হিসাব খোলার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, বামনা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জাফরিন জাহান তার অফিসের কর্মচারীদের দিয়ে মাতৃত্বকালীন ভাতার উপকারভোগী গর্ভবতীতের ব্যাংক হিসাব খোলার নামে জনপ্রতি ২০০ থেকে ৫০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া উপকারভোগীদের সশরীরে সোনালী ব্যাংক বামনা শাখায় উপস্থিত হয়ে নমুনা কার্ডে স্বাক্ষর দেয়ার কথা থাকলেও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও তার অফিসের কর্মচারীরা কৌশলে ব্যাংক থেকে নমুনা স্বাক্ষরের কার্ড এনে উপকারভোগীদের ২০০ থেকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে স্বাক্ষর নেন। এ কার্যক্রমে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিলে চলতি বরাদ্দে উপকারভোগীরা এখন পর্যন্ত কোনো ভাতা পাননি।

বামনা উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিস সূত্রে জানা গেছে, নারী উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে দরিদ্র গর্ভবতী নারীদের সহায়তা প্রদানের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা চালু করেছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদফতর। গর্ভবতী এবং প্রসূতি নারীর মৌলিক মানবাধিকার রূপে নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করা এ কার্যক্রমের প্রধান লক্ষ্য। সে লক্ষ্যে বামনা উপজেলায় চারটি ইউনিয়নে চলতি বছর ২০৮ গর্ভবতী নারীকে প্রতি মাসে ৩৫০ টাকা করে মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদানের আওতায় আনা হয়। এদের প্রত্যেককে সোনালী ব্যাংক বামনা শাখায় ১০ টাকার বিনিময়ে হিসাব খুলতে হবে। এ হিসাব নম্বরে তাদের মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলার অযোধ্যা গ্রামের গর্ভবতী নারী তানজিলা ইসলাম জানায়, মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্তি করা হয়। পরে তাকে বামনা সদর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ব্যাংকের কার্ডে স্বাক্ষর দিতে বলে অফিসের কয়েকজন কর্মচারী। সেখানে গিয়ে কার্ডে স্বাক্ষর দেয়ার সময় ২০০ টাকা দাবি করে অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

একই গ্রামের উপকারভোগী রিঙ্কু রানী জানায়, সবার একসঙ্গে ব্যাংকে গিয়ে স্বাক্ষর দিতে ঝামেলা হওয়ার কারণে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাদের ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে স্বাক্ষর দিতে বলেন। সেখানে দ্রুত ব্যাংকের এ কার্যক্রম শেষ করার জন্য ৫০০ টাকা দাবি করে।

এমনিভাবে অযোধ্যা ও গোলাঘাটা গ্রামের স্বর্ণা রানী, চম্পা আক্তার, দিপু রানী, ফাতিমা বেগম, তানিয়া বেগমসহ আরও অনেক গর্ভবতী নারী তাদের কাছ থেকে ব্যাংক হিসাব খোলার নামে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা নেয়ার অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে বামনা সোনালী ব্যাংক ব্যবস্থাপক বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতার উপকারভোগী গ্রাহক সংখ্যা বেশি ও আমাদের জনবল সংকটের কারণে তাদের হিসাব খোলার জন্য নমুনা স্বাক্ষরের কার্ড মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দিয়েছি। তারা উপকারভোগীদের কাছ থেকে তিনটি স্বাক্ষরের দুটি নেবেন। বাকি একটি স্বাক্ষর গ্রাহক ব্যাংকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আমার সামনে দেবেন। তবে উপকারভোগীদের কাছ থেকে ১০ টাকার বেশি নেয়া হচ্ছে কিনা তা আমার জানার কথা নয়।

অভিযুক্ত বামনা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জাফরিন জাহানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।

বরগুনা জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মেহেরুন নাহার মুন্নি বলেন, আমি এখন পর্যন্ত অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে ও অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বরগুনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে লিখিতভাবে কোনো অভিযোগ পেলে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেব।(সূত্রঃ যুগান্তর)

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/৬ ডিসেম্বর

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)