বেতাগীতে জাতীয় স্মাট কার্ড বিতরণে ইউপি সদস্যর টাকা আদায়
বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নে জাতীয় স্মার্ট কার্ড বিতরণে ইউপি সদস্য মো: হুমায়ন কবির এর বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের অভিযোগ আছে।
রবিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত জাতীয় র্স্মাট কার্ড বিতরণকালে এনআইডি নিতে আসা স্থানীয়রা এ অভিযোগ করেন। পূর্বের পরিচয় পত্র থাকা সত্ত্বেও প্রতি কার্ড বাবদ বিতরণে (অফিস খরচ ও ব্যাংক ড্রাফ) নামে নেয়া হয়েছে পাঁচ থেকে ছয় শত টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যাদের কার্ড হারানো গিয়েছে এবং যাদের নতুন হালনাগাত কৃত কার্ডের রিসিভ নেই তাদের কার্ড পাওয়ার জন্য (নাটকীয় অফিস খরচ) ছাড়াও দিতে হয় একশত থেকে দুইশত টাকা। নাম না প্রকাশের শর্তে বেশ কয়েকজন বলেন, ইউপি সদস্য কর্তৃক আদায়কৃত টাকা জমা হচ্ছে না কোন ব্যাংকে পুরাটাই যাচ্ছে তার নিজ পকেট নামক ব্যাংকে।
ইউনিয়ন পরিষদের বেশ কয়েকজন ইউ,পি সদস্যদের ভিযোগ অভিযুক্ত হুমায়নের নির্বাচনী নির্ধারিত ৯ নং ওয়ার্ডে ছিল পর্যায়ক্রমে স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম, আর তাই তিনি নিজ ক্ষমতার বলেই প্রশাসণের চোখকে ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে হাজার হাজার টাকা । ৫ নং ওয়ার্ডের ইউ,পি সদস্য মো: বশির আলম বলেন, হোসনাবাদ ইউনিয়নে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল ৩০ সেপ্টেম্বর প্রর্যন্ত জাতীয় স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়েছে । এই পাঁচ দিনে এমন অনিমের অভিযোগ উঠেনি। শুধুমাত্র আজ ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: হুমায়ন-প্যানেল চেয়ারম্যান হওয়ার কারনে আমাদের সকলের সামনে এমন অনৈতিক কর্মকান্ড করার সাহস পেয়েছে। আমি হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ এর একজন ইউ,পি সদস্য হিসেবে এমন অনৈতিক কর্মকান্ড ও অনিয়মের তিব্র নিন্দা জানাই।
অপরদিকে, শতজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, যাদের টোকেন রয়েছে, তাদের থেকে বিনামূল্যের এ জাতীয় স্মার্ট কার্ড বিতরণে জনপ্রতি প্রতিটি কার্ড বাবদ ব্যাংকে জমা দিতে হবে বলে ৪০০-৫০০ টাকা আদায় করেন আমাদের ওয়ার্ডের মেম্বার সাহেব। তবে বৃদ্ধা হালিমা বেগম বলেন, ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি আর রৌদের মধ্যে লাইনে দাড়াইয়া থাহোনের চাইতে এডা ভালো।
ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাসেল মিয়া বলেন, ৩০০ টাকা দিয়া ভোটার আইডি কার্ড ছাড়াইছি। টোকেন না থাকলে সমান ৫০০ টাকা দিয়া আইডি কার্ড আনতে অয়।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত ভারপ্রাপ্ত টি.এস মো: এমরান হোসেন বলেন, আমাদের নির্ধারিত টিম শতভাগ স্বচ্ছতার সহিত এই পাঁচ দিনের কর্মসূচি সম্পন্ন করেছেন। তবে বাহিরে বসে কে টাকা নিলো কে দাললী করল এটা তো আমাদের দেখার দায়িত্ব না। তবে এটি বেশ নেক্কর জনক।
জাতীয় স্মার্ট কার্ড বিতরণে অর্থ আদায়ের ব্যাপারে হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান বলেন, স্মার্ট কার্ড বিতরণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানান।
হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদে সর্বমোট ১২ হাজার ৪শত ৫৩ জন ভোটারদের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণের উদ্দেশ্যে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বুধবার থেকে গতকাল রবিবার প্রর্যন্ত পাঁচদিন স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকালের আলোচিত ৯ নং ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১৪০১ জন। ইতোমধ্যে হোসনাবাদ ইউনিয়নে প্রায় ১১ হাজার স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ইউ,পি সদস্য হুমায়ন কবিরকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন । এ সময় কয়েকজন ভুক্তভোগী এসে তাকে (ইউ,পি সদস্য হুমায়ন) টাকা আদায়ের বিষয়টি জানালে তিনি স্থানত্যাগ করে চলে যান।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো: কাজী শহিদুল ইসলাম বলেন, স্মার্টকার্ড পেতে টাকা লাগেনা,কেহ যদি এবিষয় অর্থ গ্রহন করে সেটা একান্ত তার ব্যাপার, তবে কাহারও টাকা আদায়ের লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।(সূত্রঃ নয়াদিগন্ত)
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১ অক্টোবর