মঠবাড়িয়ায় এতিমখানার নামে অর্থ লুটপাটের অভিযোগ

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৯:৪৬ এএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

এতিমখানার নামে অর্থ লুটপাটের অভিযোগমঠবাড়িয়ায় হাজী গুলশান আরা শিশু সদনের সভাপতি আবদুল গফ্ফারের (৬০) বিরুদ্ধে এতিমখানার ভুয়া এতিমের নামে সরকারি অর্থ লুটপাটের একাধিক অভিযোগ উঠেছে।

সরকারি অর্থের বিল স্বাক্ষর না করায় গফ্ফার ও সহযোগী এতিমখানার শিক্ষক মাওলানা মোস্তফা মাহামুদ (৫০) মিলে গত ৩ জুন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা চেষ্টা চালায় এবং অফিস ভাংচুর করে।

অভিযুক্ত গফ্ফার বড় হারজী গ্রামের মৃত কাঞ্চন সিপাহীর ছেলে।

ওই কর্মকর্তাকে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় দেশজুড়ে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সমাজসেবার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

জানা গেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে গফ্ফারের বিভিন্ন দুর্নীতি ও প্রভাব খাটানোর চাঞ্চল্যকর তথ্য। ‘গফ্ফার সিকিউরিটি’ নামে প্রতারক গফ্ফার একটি প্রাইভেট কোম্পানি সমাজসেবা অধিদফতরের সঙ্গে চুক্তিতে আউট সোর্সিং কর্মী নিয়োগ করে। এতে বেকার তরুণ-তরুণীদের সরকারি চাকরি দেয়ার নাম করে জনপ্রতি ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

দাউদখালী ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক রাহাত খান জানান, ৮০’র দশকে উপজেলার দধিভাংগা বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল মজিদ বেপারি দোকানের মালামাল ক্রয় করতে খুলনা যাওয়ার পথে গফ্ফার তাকে কাঁথা চাপা দিয়ে ১২ হাজার টাকা লুটে নেয়। ওই থেকে এলাকায় গফ্ফারের কাঁথা চাপা গাফ্ফার নামে পরিচিতি পায়।

তিনি আরও জানান, ১৯৯৭ সালে ভুয়া দলিল দিয়ে গফ্ফার সমাজসেবা থেকে মায়ের নামে ‘হাজী গুলশান আরা শিশু সদন’ প্রতিষ্ঠা করে। শুরু থেকেই নামেমাত্র এতিম থাকলেও অধিকসংখ্যক এতিমের নামে মোটা অংকের বরাদ্দ এনে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল। মঠবাড়িয়া সমাজ সেবা কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান দায়িত্ব থাকাকালে ৪৯ জন এতিমের ডিজি অফিসের আগাম বরাদ্দ দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করার অপরাধে তৎকালীন থানার ওসি আবদুল বারেক তাকে গ্রেফতার করেন। এ সময় গফ্ফার ৮ মাস হাজতবাস করে। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তদন্ত প্রতিবেদন গফ্ফারের দুর্নীতি প্রকাশ পায়। প্রতিবেদন পেয়ে ইউএনও জিএম সরফরাজ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আখলাকুর রহমানকে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দেন। পরে ছয় মাসের বিল চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে গফ্ফার সন্ত্রাসী নিয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অফিস কক্ষে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা ও অফিস ভাংচুর করে। ওই ঘটনায় মামলা হলে আবদুল গফ্ফার গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে রয়েছে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বাচ্চু মিয়া আকন জানান, গফ্ফারের বাবা কাঞ্চন হাজী মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় দাউদখালী ইউনিয়নের শান্তি কমিটির সম্পাদক ছিলেন।

মঠবাড়িয়া থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার বলেন, সরকারি কর্মকর্তার ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দানের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আবদুল গফ্ফার ও ওই এতিমখানার শিক্ষক মোস্তফা মাহমুদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১০ সেপ্টেম্বর

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)