আমাকে সবাই নায়িকা মৌসুমী আপুর নামেই ডাকতো
মিষ্টি জান্নাত এবার বড়পর্দায় হাজির হচ্ছেন চিনিবিবি হয়ে।
ছবি নিয়ে আমি বেশ এক্সাইটেড
এটি আমার দ্বিতীয় ছবি। আমাকে নিয়েই গড়ে ওঠেছে ছবির গল্প। ফলে একটু বেশিই এক্সাইটেড বলতে পারেন। আগামীকাল ছবিটি সিরাজগঞ্জের চালাতে মুক্তি পাবে। চিনি বিবিতে ষোল বছরের একটা মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। চঞ্চল টাইপের একটা মেয়ে।
প্রথমবার মাটির ঘরে
আমি বেড়ে ওঠেছি শহরে। গ্রাম সম্পর্কে আমার তেমন কোনো ধারণাই ছিল না। অভিজ্ঞতা না থাকলেও খুব একটা সমস্যা হয় নি। শুটিং হয়েছে গত বছরের এপ্রিলে শেরপুরের নলিতা বাড়ি উপজেলার প্রত্যন্ত তিনআনি গ্রামে। এ সময় প্রচন্ড গরম ছিল। তারপর মাঝে মাঝেই কারেন্ট থাকতো না। আর পুরো শুটিং হয়েছে একটা মাটির কাঁচাবাড়িতে। সারাদিন থাকতে হয়েছে মাটির ঘরেই। আর শ্যুটিং করতে হয়েছে খালি পায়ে। যদিও রাতের বেলা থেকেছি শেরপুর শহরে। প্রতিদিন প্রায় আড়াই ঘন্টা জার্নি করে শুটিং স্পটে পৌছতে হয়েছে। সকাল ৬ টায় বের হয়ে রাতের আড়াইটায় ফিরতে হতো। ঘুমিয়েছি মাত্র তিন থেকে চার ঘন্টা করে।
পড়তে হয়েছে মৃত্যুর কবলেও
শ্যুটিং চলাকালে বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়েছে। গ্রামের পরিবেশে মারামারি করার একটা দৃশ্যে একবার পা মচকে গিয়েছিলো। এরপর পায়ে ব্যথা নিয়েই পরেরদিন শুটিং করতে হয়েছে। এরপর আরেকদিন নৌকাডুবির একটা দৃশ্যে পানিতে ডুবে গিয়েছিলাম আমি আর অমিত ভাই। আরেকটু হলেই মরে যেতাম।
আমাকে সবাই মৌসুমী বলে ডাকতো
ঐ গ্রামের মানুষ কখনো নায়িকা দেখে নি। আমাকে দেখেই প্রথমে তার বলতো যে নায়িকা মৌসুমী শুটিং করছে। সবাই আমাকে মৌসুমী মৌসুমী বলে ডাকতো। পরিচালক, ইউনিটের লোকজন ভুল ধরিয়ে দেওয়ার পরও অনেকে বলতো আমি নাকি মৌসুমীর মতো দেখতে। অনেকে শাবনুরও বলেছে। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে অনেকে শরীর ধরে ধরে দেখতো আমি মানুষ কি না। কারণ তারা মনে করতো নায়িকারা স্বর্গের কেউ বা তারা আসলে ভিনগ্রহের কেউ। আর আউটডোর শুটিংয়ে তো একদিন আমাকে টেনে হিঁচড়ে ফেলার মতো অবস্থা হয়েছিল। পরে বাড়তি প্রটেকশন দিয়ে আমাকে রাখা হয়।
চিনি বিবি দেখতে চালু হচ্ছে হল
এটা আমার জন্য বিশাল একটা ব্যাপার যে আমার ছবি দেখতে নলিতা বাড়ির তিনআনি গ্রামের বন্ধ হওয়া সিনেমা হলটি চালু হচ্ছে। আমি নিজেকে গর্বিত মনে করছি।
ভবিষ্যতের প্রস্তুতি
সামনে অনেকগুলো ছবিতে কাজ করতে যাচ্ছি। এর মধ্যে যৌথ প্রযোজনার দুটি ছবি আছে। যেখানে আমি ওপার বাংলার নায়ক সোহমের সঙ্গে অভিনয় করছি। দুটো ছবিই পরিচালনা করবেন সজল আহমেদ। আর আমি তো ছোটবেলা থেকেই নাচ-গান অভিনয় করে আসছি। ফলে নতুন করে শেখার কিছু নেই। আর এমনিতে ডায়েটিং করা, জিম করা এগুলো চালিয়ে যাচ্ছি। আর নিজেকে আমি সব ধরনের ক্যারেক্টারেই অভিনয় করার জন্য গড়ে তুলছি। ভাত দে, আলোর মিছিলের মতো ছবিতে অভিনয় করতে চাই। আর ভবিষ্যতে ভাল ভাল ছবি করতে চাই। মানসম্পন্ন ছবি উপহার যাতে দিতে পারি সেজন্য বছরে দুইটে তিনটের বেশি ছবি করতে চাই না।
নতুন নায়িকাদের নিয়ে আমি চিন্তিত নই
এখন প্রচুর নতুন নায়িকা আসছে। কিন্তু এটা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। কারণ আমি মনে করি যে ভাল অভিনয় করবে সেই টিকে থাকবে।
উল্লেখ্য ২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া শাহাদাত হোসেন লিটন পরিচালিত ‘লাভ স্টেশন’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বড়পর্দায় অভিষেক ঘটে মিষ্টি জান্নাতের। এ পর্যন্ত বিনোদন ধারা পারফর্মিং অ্যাওয়ার্ড, সালমান স্মৃতি অ্যাওয়ার্ডসহ বেশ কিছু অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।