কাঠালিয়ায় বাল্যবিয়ে ঠেকাতে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীর বিষপান
কাঠালিয়া প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় বাল্যবিয়ে ঠেকাতে নিজেই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী রাবেয়া আক্তার (১৪)। আশংকাজনক অবস্থায় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় উপজেলার পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাবেয়া আক্তার খুলনা প্লাটিনাম জুট মিল হাই স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী এবং ওই গ্রামের দুলাল খানের মেয়ে।
বাল্যবিয়ে ঠেকানো রাবেয়া আক্তার জানান, আমি দাদা-দাদীর সাথে খুলনায় থাকতাম। করোনা মহামারীতে দাদা-দাদির কোন কাজকর্ম না থাকায় বাসা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসি। গ্রামে আসার পর পারিবারিক অর্থনৈতিক অক্ষমতার সুযোগে দাদা-দাদির কাছে অনেকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। গত শুক্রবার আমাকে জোর করে মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী গ্রামের মৃত ডালিম খানের ছেলে ও স্থানীয় নতুন বাজারের চা দোকানী শাহিন খানের(২৫) সাথে আমার বিবাহের দিন তারিখ ঠিক করে আংটি পড়ায়। অনেক চেষ্টা করেও বিবাহ ঠেকাতে না পেরে বাধ্য হয়ে ঘরে থাকা বিষ (তুতিয়া) ও ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করি।
রাবেয়ার নানী সেলিনা বেগম জানান, গত ১৪ বছর আগে রাবেয়ার বাবা দুলাল খান আমার মেয়েকে (রাবেয়ার মা) তালাক দেয় এবং দ্বিতীয় বিয়ে করে ঢাকায় থাকে। এ ঘটনায় আমার মেয়ে মানষিক ভারসাম্য হারায় এবং ওই থেকে সে আমার কাছে থাকে। আর রাবেয়া খুলনায় দাদা-দাদির কাছে থাকতো। আমি নাতি রাবেয়ার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও আমার সাথে তারা কোন যোগাযোগ করতে দিতো না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ কামরুজ্জামান জানান, আত্মহত্যা চেষ্টাকারী রাবেয়াকে মূমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তুতিয়া ও ঘুমের ঔষধ সেবন করায় তার অবস্থা আশংকাজনক ছিলো। প্রাথমিক চিকিৎসায় অকেটা সুস্থ। তবে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে রেফার করা হয়। কিন্তু রাবেয়ার পরিবারের আর্থিক সমস্যার কারণে বলিশাল না গিয়ে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছে।