ভিজিডি, জাটকা চাল ও প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারে অনিয়ম পাথরঘাটায় ইউপি সদস্য শাহ জালালের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ!
বরগুনার পাথরঘাটায় ইউপি সদস্য শাহ জালালের বিরুদ্ধে জেলেদের জাটকা চাল রিকসা চালককে দেয়া, সরকারী চাকরিজীবি, প্রবাসী ও অবিবাহিত যুবককে বিবাহিত দেখিয়ে দুস্থ্য মহিলা উন্নয়নের (ভিজিডি) চাল দেয়া ও প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ইদ উপহার ২ হাজার ৫শ টাকা অবিবাহিত যুবককে অন্যের স্ত্রীকে নিজের বউ সাজিয়ে টাকা আত্নসাতসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক অভিযোগ পেয়ে তদন্তে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।
শাহ জালাল কাঠালতলী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও কালীবাড়ি এলাকার মো. হাকিমের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়ে তখন থেকেই গরীবের জন্য যত সরকারী সহযোগীতা আসতো সকল সময়ই তিনি অনিয়ম করে আসছেন। জেলেদের মাঝে বরাদ্ধ জাটকা চাল প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে রিকসা-ভ্যান চালক, সরকারী চাকরীজিবী ও প্রবাসীদের মাঝে ভিতরন, বয়স্ক ভাতার নাম দিতে টাকা দাবি এবং সর্ব শেষ ইদে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ২৫শ টাকা অন্যের স্ত্রীকে অবিবাহিত যুবকের বউ সাজিয়ে আতœসাতসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। গত ১৫ জুন জেলেদের মাঝে জাটকা চাল ভিতরনের সময় নিজে জেলেদের চাল ভ্যান গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় ট্যাগ অফিসার এবিএম জহিদ হাতেনাতে ধরে ফেলে। তাছারা গত ১৭ সেপ্টেম্বর জেলেদের ৬৫ দিনের অবরোধের চাল ভিতরনের সময় এক প্রবাসীকে চাল দিলে ওই ট্যাগ অফিসার কার্ড জব্দ করেন। তার এই অনিয়ম নিয়ে একাধীক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করার পরেও তিনি একই ভাবে অনিয়ম করেই যাচ্ছেন। এনিয়ে স্থানীয় সাধারন মানুষের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধীক স্থানীয়রা জানান, আমাদের এই ওয়ার্ডে এখন পর্যন্ত যত সরকারী সহায়তা এসেছে সব সময়ই জালাল মেম্বর তার নিজস্ব কিছু লোকের মাঝে তা বিতরণ করেছেন। আমরা এর প্রতিবাদ করলেই তিনি আমাদেরকে বিভিন্ন সময় শাসিয়ে যায় এবং সুযোগ পেলেই নানা ভাবে হয়রানী করে তাই সহজে কেউ মুখ খুলতে চায় না।
ট্যাগ অফিসার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক ক্রেডিট সুপারভাইজার মো. আবু জাফর খান জানান, এক প্রবাসীকে দুস্থ্য মহিলা উন্নয়ন (ভিজিডি) চাল দেয়ার কারনে সেই কার্ডটি আমরা জব্দ করেছি। তাছারা এর আগেও তিনি বিভিন্ন সময় অনিয়ম করেছেন তা নিয়ে বর্তমানে তদন্ত চলছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন জানান, আমাদের এই এলাকার যারা গরীব তাদের কখনো কোন সরকারী সহযোগীতা করা হয়না। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আড়াই হাজার টাকাও ঠিক মত বন্টন করেন নাই। যাদের দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে কেউ সেনাবাহিনী আবার কেউ প্রবাসী। তাছারা এক যুবককে দেয়া হয়েছে সে বিবাহই করেন নাই। মুলতো যদের মধ্যে ভিতরন করা হয়েছে তারা কেউ সেই টাকা পায় না তার পরেও সে দিয়েছে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শাহ জালাল অবিবাহিত যুবককে টাকা দেয়া ও প্রবাসীকে দুস্থ্য মহিলা উন্নয়ন (ভিজিডি) চাল দেয়ার সত্যতা স্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, অবিবাহিত যুবকের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে, সে কি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঈদ উপহারের টাকা পেতে পারেনা? আর ওই প্রবাসী মহিলার পরিবারটির অবস্থা খারাপ থাকার কারনে চাল দেয়া হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, এরকমের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যাবস্থ নেয়া হবে।