পাথরঘাটায় উপসর্গ নিয়ে ৯ দিন ঘুরেও এক সাংবাদিক নমুনা দিতে পারেনি

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৭:১৭ পিএম, ৩ জুলাই ২০২০

ছবিঃ পাথরঘাটা নিউজ

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় ৯ দিন ধরে করোনাভাইরাসে উপসর্গ নিয়ে ঘুরেও বরগুনার পাথরঘাটা সংবাদদাতা এএসএম জসিম নমুনা দিতে পারেনি। এ সময় তিনি নিজ দায়িত্বে জেলা হাসপাতালে নমুনা দিয়ে আসার কথা বলেও তারা ভিবিন্ন অজুহাত দেখিয়ে পরে আসার কথা জানিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলেন। পরে আজ শুক্রবার (৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে চিকিৎসা নিতে চাইলে শুক্রবার ছুটির দিন তাই শনিবার আসার কখা বলে পাঠিয়ে দেন। অসুস্থ শরীর নিয়ে বারবার ঘোরাফেরা করেও কোনো সমাধান না পাওয়ায় চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।

এএসএম জসিম স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল পাথরঘাটানিউজ.কম এর বার্তা সম্পাদক ও দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার পাথরঘাটা সংবাদদাতা।

তিনি জানান, গত ২৫ জুন থেকে নিয়মিত নমুনা দেওয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ৩দিন পরে সিরিয়াল দিয়ে ২৯ জুন আসতে বলেন। এ পর্যন্ত নমুনা দেয়ার জন্য ৫বার গিয়েও তিনি নমুনা দিতে পারেননি।

জসিম বলেন, আজ না আবার কাল আসেন এরকম আমাকে ঘুরিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সময়ে আমাকে আবার যেতে বলে। গতকাল সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানতে পারি পরিবহন সংকটের কারণে দুদিন ধরে করোনা পরীক্ষার কার্যক্রম বন্ধ। পরে অনেক অনুরোধ করে নমুনা সংগ্রহ করে নিজ উদ্যোগে বরগুনা জেলা হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি করি। রাজি হয়েও একপর্যায়ে তাতে অপারগতা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ। আজ শুক্রবার আবারও আমাকে যেতে বলেন, গিয়েও নমুনা দিতে পারিনি। তাই ব্যর্থ হয়ে হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছি।

তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ যদি চেষ্টা করতেন, আমার মত রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হতো না। তিনি নিজের দোষগুলো অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে এড়িয়ে চলেন।

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন আবাসিক চিকিৎসক ও জরুরি বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী।

না প্রকাশ না করার শর্তে একাধীক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, পাথরঘাটা থেকে বরগুনা সদর হাসপাতালের যাতায়াত ভাড়া সর্বোচ্চ ১শ টাকা হবে। প্রতিদিন শত-শত মানুষ আসা-যাওয়া করছে। সেখানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধানের যাতায়াতের সংকটের কথা অযৌক্তিক ও দায়িত্ব অবহেলার কারণ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা সারাদিন তার বানায় রোগী দেখেন। তা ফেলে আসলে যদি রোগী না পান তাই হয়তো তিনি সেখান থেকে বের হন না।

পাথরঘাটা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক আয়শা সিদ্দিকা জানান, সার্বক্ষণিক কোনো ধরনের প্রোটেকশন ছাড়াই তারা সেবা দিচ্ছেন। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন আছেন, কিন্তু তারা আক্রান্ত কিনা তাও পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারছেন না। তার দুটি সন্তান ও মা রয়েছেন বাসায়। সারাদির মানুষের সেবা দিয়েও বাসায় গিয়ে ভয়ে সন্তানের কাছে থাকতে হয়।

বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ূন শাহিন খান সাংবাদিকদের জানান, পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে নমুনা সংগ্রহ করে মোটরসাইকেল অথবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স যোগে সদর হাসপাতালে পৌঁছাতে। সেখান থেকে পরীক্ষার জন্য বরিশাল পাঠানো হবে।

জেলা থেকে বলার পরেও কেন নমুনা নেয়া হচ্ছেনা সে বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আগামীকাল থেকে নিয়মিত নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)