পাথরঘাটার নিভে যাওয়া সেই বাড়িটি আবার আলোকিত!
শফিকুল ইসলাম খোকন
একটি বাড়ি, কয়েকজন মানুষ, সেই মানুষগুলোকে ঘিরে তার অস্তিত্ব, যে দিগন্ত বিস্তৃত আকাশের দিকে তাকিয়ে তার কল্পনার বিস্তার ঘটেছিল, যেখানে সব বয়সের মানুষদের নিয়ে স্বপ্নগুলো পাখা মেলেছিল, যে বাড়িটিতে তার শক্তি যুগিয়েছে সেই বাড়িটি একটি কালো অধ্যায় এসে সব কিছু তছনছ করে দিয়েছিল। একটি সড়ক দুর্ঘটনা সকল অসি¦স্ত মেলান করে দিয়েছিল।
২০১৩ সালের ২৬ জুলাই বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম সবুর টুলু ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যূ হয়। তখন প্রিয় নেতার হঠাৎ মৃত্যূতে গোটা এলাকা স্তব্দ হয়ে যায়। সাথে সাথে মন্ত্রী পরিষদসহ সারাদেশও শোকে স্তব্দ হয়ে পড়ে। সেই থেকেই এই বাড়িটি নিভে যায়, নিয়ে যায় সব কল্পনা, অসি¦ত্ব। যে বাড়িতে প্রতিনিয়ত মানুষের ছিল আনাগোনা, এতিম, মিসকিনসহ হত দরিদ্ররা একটি কাপড়ের জন্য এই বাড়ির গেটেই অবস্থান করেছিল। বিশেষ বিশেষ দিনে এক মহামিলন মেলা ঘটেছিল। আলোকিত ছিল ‘এমপি গোলাম সবুর টুলুর বাসভবন’। সাংসদ গোলাম সবুর টুলুর মৃত্যূতে সব কিছুই শেষ হয়ে গিয়েছিল। নিভে গিয়েছিল সব কিছু। দীর্ঘ ৫ বছর পর নিভে যাওয়া বাড়িটিই আবার আলোকিত হলো। প্রাণ ফিরে পেল আগের মতো। প্রায়াত সাংসদ গোলাম সবুর টুলুর সমধর্মীনি সুলতানা নাদিরাকে সংরতি আসনে এমপি ঘোষনা করায় স্মৃতিময় দিনগুলোতে ফিরে যাবার একটা অনুভূতি ফিরে আসে। আবার আলোকিত হলো নিভে যাওয়া বাড়িটি।
৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলটির সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় একাদশ জাতীয় সংসদের সংরতি নারী আসনে আওয়ামী লীগের ৪১জন সংসদ সদস্যদের নাম ঘোষণা করে। এতে জাতীয় সংসদের সংরতি নারী আসনে বরগুনা ও ঝালকাঠি আসনে সুলতানা নাদিরার নাম ঘোষনা করায় বরগুনার পাথরঘাটায় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে আনন্দ উলাস ছড়িয়ে পড়ে। প্রিয মানুষটির নাম ঘোষনা করায় মিষ্টি বিতরণ ও দোয়া মোনাজাতও করা হয়।
সুলতানা নাদিরা বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের পুত্রবধু। বরগুনা-২ আসনের প্রায়াত সাংসদ গোলাম সবুর টুলুর স্ত্রী। মধুমতি সিরামিকস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সবুর টুলু ২০১৩ সালের ২৬ জুলাই পাথরঘাটা থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যূ বরণ করেন। এরপর পরিবারটি রাজনীতি থেকে কিছুটা গুটিয়ে নিলেও স্থানীয় জনগণের সাথে সব সময়ই যোগাযোগ রাখতেন। পরবর্তিতে তার জ্যেষ্ঠ কন্যা ফারজানা সবুর রাজনীতি সক্রিরয় হলেও মনোনয়ন চাননি।
গোলাম সবুর টুলুর বড় মেয়ে ফারজানা সবুর রুমকি ও মেঝ মেয়ে তিন্নি বলেন, বাবার মৃত্যূর পরে আমাদের সব কিছুই শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমরা মানসিকভাবেই একেবারেই গাবরে গিয়েছিলাম। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার মা সুলতানা নাদিরাকে এমপি মনোনীত করায় তার প্রতি এবং মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি চির কৃতজ্ঞ।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১৩ ফেব্রুয়ারি