সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল আর নেই।
মুক্তিযোদ্ধা, বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল আর নেই। ২২ জানুয়ারি ভোর ৪টার দিকে আফতাব নগরের নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
প্রিয়.কমকে ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টার দিকে এ খবর জানিয়েছেন শিল্পীর ব্যক্তিগত সহকারী রোজেন।
তিনি বলেন, ‘স্যার ভোর সোয়া ৪টার দিকে বাসাতেই মারা গেছেন। তিনি আমাকে ফোন দিয়ে জানান, “তাড়াতাড়ি বাসায় আসো, আমার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।” এরপর ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে আমি স্যারের বাসায় যাই। কিন্তু কোনো পালস পাইনি। পরে মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা তাকে সাড়ে ৫টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এর আগে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি বুলবুলের হার্টে আটটি ব্লক ধরা পড়ে। তার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পেরে চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বুলবুলকে দেখতে যান।
প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর বুলবুলকে ভর্তি করা হয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সেখানে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা বুলবুলের বাইপাস সার্জারি না করে শরীরে রিং পরানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরপর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন তিনি।
সে সময় রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. অধ্যাপক আফজালুর রহমানের অধীনেই বুলবুলের শরীরে দুটি স্টেন্ট (রিং) স্থাপন করা হয়।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিক থেকে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগীতে সক্রিয় হন। ১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ ছবিতে সংগীত পরিচালনার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন তিনি। সেই থেকে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি।
সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আবদুল হাদী, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনক চাঁপাসহ বাংলাদেশি প্রায় সব জনপ্রিয় শিল্পীর সঙ্গে কাজ করেছেন বুলবুল।
১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বুলবুল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। সংগীতে অবদানের জন্য তিনি রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন।