পুলিশের ৭০ কর্মকর্তা প্রত্যাহারের দাবি ঐক্যফ্রন্টের
মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সুপারসহ শীর্ষ পর্যায়ে ডিআইজি পর্যন্ত ৭০ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন(ইসি) সচিবের কাছে ওই কর্মকর্তাদের তালিকা জমা দিয়েছে রাজনৈতিক এই জোট। জোটের পক্ষ থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এ সংক্রান্ত চিঠি ও তালিকা জমা দেন।
আলাল বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য পুলিশের দলবাজ ও রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারি কর্মকর্তাকে নির্বাচনী দায়িত্ব না দেয়া জন্য বলেছি। পুলিশের ডিআিইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সুপারের মতো পদধারী ৬০ জনের বেশি কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি। যারা সমতল মাঠকে অসমত করার কাজে ব্যস্ত, তাদের নাম, পদবি, কর্মস্থলসহ সকল তথ্য নির্বাচন কমিশনের দিয়েছি।
তিনি বলেন, সিইসি আজ নিরপেক্ষ থাকার জন্য পুলিশকে আহ্বান জানিয়েছেন। আহ্বান জানানো মানে অনুরোধ করা। তিনি তো নির্দেশ দেয়ার ক্ষমতা রাখেন।
সরকারের এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টাতার বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ওনাদের কাছে দালিলিক কাগজপত্র উপস্থাপন করেছি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে সরকার কিংবা নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা যে কাজগুলো করতে পারে না, সে কাজগুলো অনবরত করা হচ্ছে। তার কয়েকটি উদাহরণ ওনাদের কাছে তুলে ধরেছি এবং প্রতিকার চেয়েছি।
ভবিষ্যতে যাতে এসব কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি না হয়, এজন্য তাদের বিরেুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ক্ষেত্রে প্রতিবদ্ধকতার যেগুলো আমাদের চোখে পড়েছে তার মধ্যে কয়েকটি হলো- মহামান্য রাষ্ট্রপতি, আমাদের সবার শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি, ওনার পুত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। বঙ্গভবনে এলাকার লোকজন নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে এবং সেখানে তাদের রাষ্ট্রীয় খরচে আদর-আপ্যায়ন করা হয়েছে, যেটা প্রভাব বিস্তারের একটা অন্যতম উদাহরণ হিসেবে আমরা মনে করি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের সচিব এবং চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারদের ডেকে গত ১৬ নভেম্বর বৈঠক করেছেন। পরবর্তীতে ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিট্রন পুলিশের কমিশনার, তার এলাকার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের ডেকে কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। এসব ঘটনা নির্বাচন আইনের লঙ্ঘন হয়েছে।
এনটিএমসি এবং বিটিআরসি বিতর্কিত দলকানা কর্মকর্তা কর্মচারিরা আছেন। তারা কিছুদিন আগে থেকেই কার্যক্রম শুরু করেছেন। তারেক রহমানের স্কাইপিতে কথপোকথন বন্ধ করেছেন। গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের আশেপাশে ইন্টারনেট কার্যক্রম বন্ধ কেরেছেন। যেটাও আচরণ বিধির লঙ্ঘন।
ব্যাপকহারে গ্রেফতার এখনো চলছে। গতকাল রাতেও বিভিন্ন জায়ড়গায় গ্রেফতার চলেছে। তারমধ্যে আমাদের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও রয়েছে। যে নির্দেশনা পোস্টার বিলবোর্ডসহ প্রচারণা সামগ্রী সরানোর যে নির্দেশনা কমিশন থেকে দেয়া হয়েছিল, এখনো ঢাকা শহরের বহু জায়গায় নৌকা এবং লাঙ্গলের পোস্টার রয়েছে। এজন্য প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেও
য়ার দাবি জানিয়েছি।
উপরন্তু সিটি করপোরেশন ও আরো কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সরকারের উন্নয়ন কর্মের নামে নৌকার পক্ষে প্রচার কাজ অবিরাম চালানো হচ্ছে। এটা বন্ধ করার দাবি করা হয়েছে। গণহারে আওয়ামী পন্থী কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হচ্ছে। এদের সঙ্গে জনপ্রশাসনের দলবাজ কর্মকর্তাদেরও প্রত্যাহার চাওয়া হয়েছে।
আলাল বলেন, আমরা ঢালাও অভিযোগ করি না। আজকে লিখিতভাবে সব তথ্য প্রমাণসহ দিয়ে গেলাম।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২২ নভেম্বর