মসজিদ ও মাদরাসার নামে টিআর উত্তোলন পাথরঘাটায় বিদ্যুতের ৫লাখ টাকা ইউপি সদস্যের পেটে!
বরগুনার পাথরঘাটায় সাবেক ইউপি সদস্য মকিম সিকদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুত দেয়ার নাম করে লাখ টাকা উত্তোলণ করে আত্মসাত, ত্রান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয়ের ইট দিয়ে নিজের বাড়িতে রাস্তাকরণ, মসজিদ মাদ্রাসার নামের টিআরের চাল আত্মসাতসহ ব্যাপক অনিয়ম দূর্ণীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মকিম সিকদার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের মধ্য কালমেঘা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য। ইউপি সদস্য থাকাকালীন নানা অনিয়ম ও দূর্ণীতির করে আসছে। গত কয়েক মাস আগে মধ্য কালমেঘা গ্রামের ৫০টি পরিবার থেকে ১০ হাজার করে মোট ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে মকিম ও তার মেয়ে স্কুল শিক্ষিকা মুনিরা আত্মসাত করে। একইভাবে এইচবিবি প্রকল্পের অধিনে ১৬৪০ ফুট গ্রামীণ রাস্তা পাকাকরণের দূর্ণীতি আশ্রয় নেয়া ও নিজের বাড়িতে সরকারি ইট দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে। মাদ্রাসার ও মসজিদের নামে তিনি টিআর উত্তোলন করেছেন, ওই মসজিদ ও মাদ্রাসা পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় এবং মকিম সিকদারের বাড়িতে প্রবেশের রাস্তাটি ইট দিয়ে পাকাকরণ দেখা যায়। গত ১৮ জুলাই ওই এলাকার বাসিন্দা মাহবুব খতিব পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাদের বরাবরে অভিযোগ দেয়ার পর অভিযোগকারী জহিরুল ইসলাম ও তার সহযোগীদের দেখে নেয়ার হুমকি দেন মকিম সিকদার। ভীত সন্ত্রস্ত্র হয়ে একজন মকিম সিকদারের সাথে আপোষ করেলেও বাকীরা তার চাপে নমনীয় না হওয়ায় মেয়ে রাবেয়া বেগমকে বাদী করে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে একটি মিথ্যে মামলা দায়ের করান। ওই মামলা মাহবুব ও মালেক পলাতক রয়েছে। মিলনকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। বর্তমানে মিলন জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
ভুক্তভোগী জাকির, ছাহেরা বেগম, জলিল খতিব, মরিয়ম বেগম ও সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক পাথরঘাটা নিউজকে জানান, আমরা বিদ্যুতের জন্য মকিম সিকদার ও তার মেয়েকে হাস-মুরগী বিক্রি করে অনেক কস্টে টাকা দিয়েছি। সে এই গ্রমে ২৮টি ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে। আমরা মকিমের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। তাদের অনিয়মের প্রতিবাদ করলেই তার মেয়েদের ব্যবহার করে হয়রানী করেন। মেয়েরা প্রকাশ্যে হুমকী ধামকি দেয়, এমনকি অনেককে মারধরও করে ও উল্টো মামলা করেও হয়রানী করে।
এ ব্যপারে মকিম সিকদারের সাথে তার বাড়িতে কথা বলতে গেলে তার মেয়ে রাবেয়া বেগম সাংবাদিক পরিচয় জেনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তার বাবার সাথে যোগাযোগ করাবেন না বলেও জানান। মকিম সিকদারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পাথরঘাটা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য থাকাকালীন তার বাবা মৃত সামাদ সিকদার বাড়ির মসজিদ ও মাদ্রাসার নামে তিনবার টিআর উত্তোলন করেছেন। মসজিদ পরিচালনা কমিটির অভিযোগ, বরাদ্দকৃত টিআর এর বিন্দুমাত্র কাজ না করিয়েই তিনি আত্মসাত করেছেন। একই সাথে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল পাথরঘাটা কার্যালয় থেকে প্রতিবেশী জালালের স্ত্রী নামে নলকুপ বরাদ্দ নিয়েছিলেন মকিম। কিন্ত সেটি নিজ বাড়িতে স্থাপন করেছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, আমি এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত স্বাপেক্ষে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১৫ নভেম্বর