পাথরঘাটা হাসপাতালে ২জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে সেবা!
বর্তমান সরকারের স্বাস্থ্য সেক্টরে অনেক অর্জন থাকলে এর ব্যতিক্রম বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে। যুগযুগ ধরে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত এ উপজেলার প্রায় চার লক্ষাধিক মানুষ। মাত্র দুইজন ডাক্তার দিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা। ২৮টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তামনে কর্মরত আছেন দুইজন চিকিৎসক। ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান ও কর্মচারী সংকটে কারণে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসাপাতালে চিকিৎসার বেহাল দশা। নাম সর্বস্ব চলছে এর কার্যক্রম। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহসুমুল হক খানের কাছে গিয়েও লাঞ্চিত হতে হয় অনের রোগীকে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তাসহ ২৯টি চিকিৎসকের পদ। উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকতা ও দুই জন সহকারী চিকিৎসক রয়েছে। দীর্ঘ দিন যাবত শূন্য রয়েছে ২৬জন চিকিৎসকের পদ। মাঝে মধ্যে দু’একজন ডাক্তার এখানে যোগদান করলেও তদবির করে দুএক মাসের ব্যবধানে অন্যত্র চলে যান।
গত দুই মাস আগে ডাঃ মো. ফয়সাল নামের এক চিকিৎসক এ হাসপাতালে যোগদান করলেও এক মাসের মধ্যে অন্যত্র বদলী হয়ে যান। এখানে দীর্ঘ বছর ধরে এভাবেই চলছে ডাক্তারদের যোগদান ও বদলীর পালা।
গাইনী চিকিৎসক কিছুদিন থাকেলও ডেন্টাল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদটি হাসপাতাল শুরু থেকেই খালী। হাসপাতালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্যাথলজী ল্যাব ও এক্সে-রে মেশিন শুরু থেকেই বাক্স বন্ধি। গত ১৮ বছর যাবত ল্যাব টেকনিশিয়ান ও এক্সে-রে অপারেটর পদ শূন্য থাকায় সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে এসব কার্যক্রম।
ভূক্তভোগীরা নিরুপায় হয়ে পার্শ্ববর্তী ক্লিনিক থেকে গলাকাটা খরচে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। এছাড়াও যেতে হচ্ছে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ও বিভাগীয় শহর বরিশালে।
হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ২৮ জনের বিপরিতে আছে ২জন, ২৪ জনে নার্স থাকার কথা সেখানে আছে ৮জন, আয়া ৬জনের বিপরিতে ২ জন এবং ওর্য়াড বয় ৩ জন থাকার কথা থাকলেও আছে ১ জন। দুইজন মাত্র চিকিৎসক আনোয়া উল্যাহ ও কাওছার আহমেদকেই সামলাতে হচ্ছে জরুরী বিভাগ ও আবাসিকসহ অন্যান্য বিভাগের রোগীকে। হাসপাতালে অসংখ্য রোগি লাইনে দাড়িয়ে চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করছেন। একমাত্র ডাঃ আনোয়ার উল্যাহ রোগী দেখছেন। অনেকে আবার চিকিৎসা না পেয়ে ক্ষোভে চলে যাচ্ছেন বাড়ি।
ভূক্তভোগী রোগী আব্দুল, ছোমেদ, ছগিরসহ বেস কয়েকজনে জানায়, প্রতিদিন অসংখ্য রোগি এ হাসপাতালে আসেন, রোগীর লম্বা লাইন দেখে আবার চলে যান তারা, আবার কম্পানীর লোকজন অফিসের সময় মুখ চিনে রোগীদের ভিতরে ডুকিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে দেন। আমরা লাইনে দারিয়ে থাকলেও অনেক সময় না দেখিয়েই চলে যেতে হয়।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাসুমুল হক খান জানান, এত বড় উপজেলায় দুইজন ডাক্তার দিয়ে দিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য হচ্ছে। চিকিৎসকের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার চাহিদা পাঠানো সত্ত্বেও কোন ফল হচ্ছে না আমাদের।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২৪ অক্টোবর