মালিক না পেয়ে এয়ারপোর্ট থেকে বাংলাদেশী ৬৩ শ্রমিক ফিরে এলো
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন বিভাগ ৬৩ জন বাংলাদেশিকে শনিবার (১৩ অক্টোবর) দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। কিন্তু দেশে ফেরত পাঠানোর কারণ সম্পর্কে জানেন না ফিরে আসা কেউই। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা এসে পৌঁছান। যে কোম্পানিতে কাজের জন্য তারা গিয়েছিলেন সেই কোম্পানি থেকে তাদের রিসিভ করতে কেউ আসেনি।
দুইদিন কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্টে অবস্থান করার পর তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ।
মালয়েশিয়া থেকে ফেরত আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সবাই মালয়েশিয়ার গ্লাভস প্রস্তুতকারী কোম্পানি সুপারম্যাক্সে নিয়োগ পান। কাজের আনুষঙ্গিকতা শেষ হয় ৩০ আগস্ট, এরপর ১০ অক্টোবর তারা পাসপোর্ট হাতে পান। তাদের ফ্লাইট নির্ধারিত হয় ১১ অক্টোবর।
ওই দিন তারা সবাই মালয়েশিয়ায় পৌঁছান। কিন্তু মালয়েশিয়ার এয়ারপোর্টে তাদের রিসিভ করতে কেউ আসেনি। দুইদিন পর্যন্ত তাদের কেই রিসিভ করতে না আসায় এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে কুলালামপুর এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন পুলিশ।
এরপর তারা শনিবার (১৩ অক্টোবর) রাতে দেশে পৌঁছান। দেশে ফিরে আসা চাঁদপুরের রিংকু সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা ৬৩ জন মালয়েশিয়ার সুপারম্যাক্স কোম্পানিতে কাজের জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের এয়ারপোর্টে কেউ নিতে আসেনি। দুইদিন এয়ারপোর্টে থাকার পর পুলিশ দেশে ফেরত পাঠায়। দেশে এজেন্সিকে জানিয়েছি। তারা বলেছে, ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে আবার যেতে পারবো।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই ৬৩ জনকে মালয়েশিয়ার ৪৬টি এজেন্সি নিয়োগ দেয় সুপারম্যাক্সে কাজের জন্য। তাদের সবার পাসপোর্ট ও জনশক্তি ব্যুরোর ছাড়পত্র যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, মালয়েশিয়ার ৪৬টি কোম্পানির নামে ভিসা অনুমোদন ও ব্যুরো থেকে ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছে বিপ্লব ইন্টারন্যাশনাল ও ওভারসিজ সাপোর্ট লাইনসহ তিনটি কোম্পানির নামে।
তবে কি কারণে কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্টে তাদের রিসিভ করা হয়নি এই বিষয়ে কোনও সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। রবিবার (১৪ অক্টোবর) সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশনের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। যে এজেন্সির মাধ্যমে তারা গিয়েছিলেন তার স্বত্বাধিকারী মালয়েশিয়ায় অবস্থান করায় তার সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে মন্ত্রণালয়সহ জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রা এই বিষয়ে অবগত আছে এবং শুরু থেকেই তদারকি করছে বলে জানিয়েছেন বায়রার মহাসচিব শামিম আহমেদ চৌধুরী নোমান। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা শুক্রবার থেকে বিষয়টি তদারকি করছি এবং মন্ত্রণালয় জানে বিষয়টা।
সুপারম্যাক্সের সাথে কোনও একটা ‘কমিউনিকেশন গ্যাপ’ ছিল। যার কারণে এমনটা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। ফিরে আসা শ্রমিকদের আবার পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। এক্ষেত্রে তাদের কোনও টাকা লাগবে না। কেউ যদি না যেতে চায় তাকে পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১৫ অক্টোবর