গোপন কথা কেন লিখবেন ডায়েরিতে?
আমাদের অনেকের প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ডায়েরি লেখার অভ্যাস রয়েছে। ব্যক্তিগত ডায়েরিতে আমরা প্রতিদিনের রুটিন থেকে শুরু করে নিজের গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ অনেক কথা লিখে থাকি। তবে ডায়েরি লেখা কিন্তু ভালো।
প্রযুক্তির যুগে হাতে ডায়েরি লেখাকে অনেকেই সময় নষ্ট মনে করেন। তবে ডায়েরি কিন্তু ডিজিটালও হতে পারে। ফেসবুকে নোট ও মোবাইলে রিমাইন্ডার লিখতে পারেন মনের কথা। অনলাইনে লিখতে পারেন আপনার ব্যক্তিগত ডায়েরি।
তা ছাড়া ব্যক্তিগত ডায়েরি লেখার কিন্তু আরও অনেক ভালো দিক রয়েছে।
আসুন জেনে নিই কেন লিখবেন ডায়েরি-
স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়
নিয়মিত ডায়েরি লিখলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। জরুরি বিষয়গুলো ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। ছোটবেলায় যেমন পড়ার পর লিখলে তা সহজেই মনে রাখা সম্ভব হয়, একই ব্যাপার ঘটে এ ডায়েরি লেখার ক্ষেত্রেও। আপনি সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পর রাতে যখন ডায়েরি লিখতে বসবেন, তখন বিশেষ ঘটনাবলি মস্তিষ্ক মনে করিয়ে দেয় এবং ধীরে ধীরে স্মরণশক্তি বাড়তে থাকে।
প্রতিদিনের রুটিন ডায়েরিতে লিখুন
রাতে ঘুমানোর আগে আপনার প্রতিদিনের কাজ ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন। একেক করে আপনার সব কাজ ভালোভাবে সম্পূর্ণ হবে। আর কোনো কাজ করতে আপনি ভুলে যাবেন না।
হাতের লেখা ভালো হয়
অনেকেরই হাতের লেখা ভীষণ সুন্দর থাকে। কিন্তু ছাত্রজীবন শেষ হয়ে গেলে হাতে লেখার অভ্যাস ধীরে ধীরে কমতে থাকে। তখন লেখালেখি সীমাবদ্ধ থাকে কম্পিউটার আর মোবাইলের এসএমএসের মধ্যেই। হাতে বলতে লিখতেই হয় না। নিয়মিত ডায়েরি লিখলে কাগজ-কলমে লেখার অভ্যাস বজায় থাকে এবং হাতের লেখা ভালো হয়।
মানসিক চাপ কমে
সব কথা সবাইকে বলা যায় না। আবার কিছু কিছু কথা কাউকে না বলেও থাকা যায় না। কিন্তু সবাইকে কি আর ভরসা করা যায়? আপনার সবচেয়ে ভরসাযোগ্য ব্যক্তি আপনি নিজেই! ডায়েরি লেখা মানে নিজের কাছে নিজের স্বীকারোক্তি, নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলা। নিয়মিত ডায়েরি লিখলে মানসিক চাপ তাই অনেকাংশেই কমে যায়। মনের চাপা উদ্বেগ নিজের জন্য লিখে ফেলা কথাগুলোতেই বন্দি হয়ে থাকে।
মন হালকা হয়
প্রত্যেকেরই মনের মাঝে কিছু গোপন যন্ত্রণা থাকে, যা মানুষকে প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়ায়। এই যন্ত্রণার কথাগুলো কাউকে বলাও যায় না। ডায়েরি হতে পারে আপনার সেই বন্ধু যাকে আপনি আপনার মনের কথা খুলে বলতে পারবেন। নিয়মিত ডায়েরি লিখলে মনের কথাগুলো বেরিয়েও আসে, আবার তা অন্য কেউ জানতেও পারে না। ফলে মন হালকা হয়।
ভুল শোধরানো যায়
কোনো মানুষই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। প্রত্যেকটা মানুষই জীবনে কোনো না কোনো ভুল করে থাকেন। নিজের কর্মকাণ্ড নিয়মিত ডায়েরিতে লিখে রাখলে নিজের ভুলগুলোতে আলোকপাত করা যায়।
আত্মশুদ্ধির সুযোগ থাকে
নিজের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক এবং নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ডায়েরিতে লিখে রাখা অতীত কর্মকাণ্ড থেকে নিখুঁতভাবে বোঝা যায়।তাই নিয়মিত ডায়েরি লেখা মানে নিজেকে আত্মশুদ্ধির সুযোগ দেয়া।
জীবন সুসংগঠিত হয়
নিজের প্রতিটি সিদ্ধান্ত, পদক্ষেপ এবং তার ফল যদি ডায়েরিতে লেখা থাকে, তা হলে পরবর্তী কাজগুলোতে ভুলত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২৬ সেপ্টেম্বর