জ্বিনতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়পাথরঘাটায় দুই শিক্ষক দিয়ে ছয় শ্রেণির পাঠদান!

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৯:২৩ এএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ০৬:১২ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জরাজীর্ণ জ্বিনতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়দক্ষিনাঞ্চলের উপকুলীয় উপজেলা বরগুনার পাথরঘাটা। এখানে প্রায় ৮০ভাগ মানুষ কৃষি ও মৎস্যের সাথে জরিত। এ উপজেলার বিষখালী নদীর কোলঘেষা জ্বিনতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ে দুই জন শিক্ষক দিয়ে চলছে ছয় শ্রেণির পাঠদান। শিক্ষক না থাকায় লেখাপড়া হয় না বলে অনেক শিশুর পরিবারই তাদের ছেলে মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠান না। প্রতি বছরই এ বিদ্যালয় থেকে ছাত্র-ছাত্রী কমতে থাকে। আবার কেউ শিশু বয়সেই তাদের বাবার সাথে কৃষি কাজ আবার অনেকে নদীতে মাছ শিকারে লেগে যান।

সরে জমিনে গিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়টির ভবন ১৯৯১ সালে নির্মান করা হয়। বর্তমানে এ ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পরেছে। গত এক বছর ধরে বিদ্যারয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য। চারজন সহকারী শিক্ষকের মধ্যে দুইজন শিক্ষক আছে এ বিদ্যালয়ে। এই দুইজন দিয়েই ১৪১ জন শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ গত বছরের জুলাই মাসে প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেনকে ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর অপবাদ দিয়ে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় বদলী করা হয়েছে। সেই থেকে কোন শিক্ষক এ বিদ্যালয়ে আসতে চায় না বলেও জানা যায়।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ফেরদৌস, সারমিন, মরিয়মসহ আরো অনেকে পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, শিক্ষক না থাকায় আমাদের নিয়মিত ক্লাস হয় না। একজন শিক্ষক দুটি শ্রেণীতে একসঙ্গে ক্লাস নেন। তাই কোনো ক্লাসই ভালোভাবে হয় না।

দুইজন শিক্ষক দিয়ে কি ছয় শ্রেণির পাঠদান নেওয়া সম্ভব? এমন প্রশ্ন রেখে সহকারী শিক্ষক তুলি ও জামাল হোসেন পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, এক সময়ে একাধিক শ্রেণির পাঠদান থাকায় শিক্ষার্থীদের সময় ব্যাহত হচ্ছে। আমরা এক ক্লাস নিতে গেলে অন্য ক্লাস ফাকা থাকে। বাধ্য হয়েই আমাদের এক সাথে দুটি ক্লাস নিতে হয়। আমরা কি করব বুজে উঠতে পারছিনা। তিনি আরও বলেন, আমরা একাধিকবার উপজেলা শিক্ষা অফিসে জানিয়েছি। আমাদের এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষক দেয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত কিছুই হয় নাই।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. শহিদ খান পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, অনেক বছর থেকেই বিদ্যালয়টি শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যায় ভুগছে। যার প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের ওপর। শিক্ষক স্বল্পতার কথাও আমি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জানিয়েছি। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ থেকে নতুন ভবন দেয়ার কথা বলেছেন। মাটিও পরীক্ষা করার জন্য আসছিল। স্থান নিধারন করা হলেই ভবনের কাজ শুরু হবে।

পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রিপন পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, বিদ্যালয়টির দুরাবস্থার কথা আমি জানি। জীর্ণ ভবন মেরামতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। টাকা বরাদ্ধ হয়েছে। সাক্ষরতা কর্মসূচিকে বেগবান করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মিজানুর রহমান টেলিফোনে পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, কয়েকদিন আগে আমি স্কুলটি পরিদর্শন করেছি। প্রধান শিক্ষক দেয়ার মত অবস্থা নেই। তবে শিগগিরই নিয়োগ হলে সহকারি শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণ করা হবে।

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১০ সেপ্টেম্বর

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)