বরিশালে ছাত্রদলের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ আহত ১০

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৫:০৭ এএম, ২৫ আগস্ট ২০১৮

বরিশালে ছাত্রদলের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ আহত ১০
বরিশাল জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে শুক্রবার (২৪ আগস্ট) দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হন বলে দাবি করা হয়েছে। এ সময় পুলিশ ছাত্রদলের এক কর্মীকে ধারালো অস্ত্রসহ আটক করে। তবে আহত কারও অবস্থাই গুরুতর নয় বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শুক্রবার (২৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল নগরের সদর রোডে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রথমে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। পরে তা আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে এই সংঘর্ষ। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিন বরিশালটাইমসকে বলেন, সংঘর্ষের সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ধারালো অস্ত্রসহ রিমন নামে ছাত্রদলের এক কর্মীকে আটক করেছে। সাত বছর পর ১৯ আগস্ট বরিশাল জেলা ও নগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি।

কয়েকজন ঘটনা প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কমিটি ঘোষণার পর ওই দিন রাতেই পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন এবং জেলা ও নগর বিএনপির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরের দিন একই দাবিতে তাঁরা নগরে ঝাড়ু মিছিলের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসানের ছবিতে অগ্নিসংযোগ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে- নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য (বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক) সোহেল রাঢ়ির নেতৃত্বে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়। এ সময় নবগঠিত কমিটির নেতা-কর্মীরা সেখানে এলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষ ইটপাটকেল ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে।

নগর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ৬ বছর ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করছি, জেল-জুলুম সহ্য করেছি। কিন্তু নতুন কমিটির কোনো পদ আমরা পাইনি। আমরা নতুন কমিটি বাতিলের জন্য দাবি জানিয়ে মিছিল-সমাবেশ করলে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে।’

তবে জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটির সভাপতি মাহফুজুল আলম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘আমরা দলীয় কার্যালয়ে এসে অবস্থান করি। এ সময় আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে বিক্ষোভকারীরা।’ বিক্ষোভকারী পদবঞ্চিত লোকজনের ওপর হামলার অভিযোগ নাকচ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে কোনো হামলা করা হয়নি। এসব অভিযোগ অসত্য।’

এর আগে ছাত্রদলের স্থানীয় নেতা আরিফুর রহমানও নবগঠিত কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর দাবি- ২০১১ সালে বরিশাল জেলা ও নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে তাঁকে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। আরিফুর রহমানের অভিযোগ, জেলা ও নগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের আগে তাঁদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা করা হয়নি। আর যাঁদের এই দুই কমিটিতে পদ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা দলের আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় না। শুধু কেন্দ্রীয় নেতাদের পছন্দের ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আনা হয়েছে।

১৯ আগস্ট ঘোষিত ওই কমিটিতে বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে যথাক্রমে রেজাউল করিম ও হুমায়ুন কবিরকে। এ ছাড়া ওই কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি হয়েছেন তরিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মাহামুদ হাসান ও সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে এনামুল হাসানকে।

অপরদিকে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে যথাক্রমে মাহফুজুল আলম ও কামরুল হাসানকে। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হয়েছেন তারেক আল ইমরান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তৌফিকুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে সোহেল রাঢ়ীকে। তবে সোহেল রাঢ়ী ওই পদ প্রত্যাখ্যান করে বদবঞ্চিতদের সাথে মাঠে আন্দোলনে নেমেছেন।’

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)