জেনে নিন কোরবানীর ধর্মীয় বিধি বিধান ও যাবতীয় খুঁটিনাটি

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৭:৩৬ পিএম, ২১ আগস্ট ২০১৮

প্রতিকী ছবিআগামীকাল পবিত্র ঈদ উল আযহা। মুসলমানদের ২য় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। এই দিনে আমরা আল্লাহর রাহে কোরবানী করে থাকি।

কোরবানীর সময় হলো যিলহজ্বের ১০ তারিখ হতে ১২ তারিখ পর্যন্ত অর্থাৎ তিনদিন দুই রাত। হুজূর আকরম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্বয়ং তাঁর মৃত উম্মতের পক্ষ থেকে কোরবানি করেছেন। তাই এটা তার জন্য সৌভাগ্যের বিষয় হবে যার পক্ষে সম্ভব হুজূরে করীমের জন্য কোরবানি করা। -[বাহারে শরীয়ত] গরু, উট দ্বারা কোরবানী করলে নফল হিসেবে একভাগ প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’র জন্যে কোরবানি দেয়া অনেকউত্তম।

কোরবানির পশুর বয়সঃ
কোরবানির ছাগল কমপক্ষে একবছর, গরু দুই বছর এবং উট পাঁচ বছর হতে হবে। কোরবানির জন্য সুন্দর ও নিখুঁত পশু বাছাই করা উত্তম। যেসব পশু অন্ধ, খোঁড়া এবং জবেহ করারস্থানে যেতে অক্ষম, লেজ, শিং কিংবা কান কাটা বা ভাঙ্গা বা দুর্বল ইত্যাদি কোরবানীর পশু কোরবানির উপযুক্ত নয়।

কোরবানির মাংস ও ভাগের শরিয়তসম্মত নিয়মঃ
কোরবানির মাংস তিনভাগে ভাগ করে এর একভাগ গরীব ও ইয়াতিম-মিসকিনদের দান করা, একভাগ আত্মীয়-স্বজনকে দেয়া এবং অন্য ভাগ নিজে রাখা মুস্তাহাব। তবে ইচ্ছা করলেআপনি পুরো মাংসই খেতে পারেন এতে দোষের কিছু হবেনা।কোরবানির পশু যবেহকারী ও মাংস প্রস্তুতকারীকে কোরবানির পশুর মাংস থেকে পারিশ্রমিক স্বরূপ দেয়া যাবেনা।

চামড়াঃ
কোরবানির পশুর চামড়া, রশি ও ফুলের মালা প্রভৃতি সদকাকরে দিতে হবে। চামড়া নিজের ব্যবহারের জন্য রাখতে চাইলে রাখতে পারবে, যেমন-জায়নামায, বিছানা, ইত্যাদি বানাতে পারবে। কিন্তু কোরবানির চামড়া বিক্রি করেএর মূল্য নিজ কর্মে ব্যয় করতে পারবে না।

মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানিঃ
যদি মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি দেয়া হয় তাহলে মাংস উপরোল্লিখিত নিয়মে বন্টন করা উত্তম।

কোরবানির পশু জবেহ করার নিয়মঃ
জবেহ করার নিয়ম জানা থাকলে কোরবানির পশু নিজ হাতে জবেহ করা মুস্তাহাব। যদি নিজে করতে না পারে তাহলে অন্যের দ্বারা তা সমাধা করা যাবে। তবে জবেহ্’র সময়নিজে সামনে থাকা উত্তম।

জবেহ্’র সময় নিম্ন লিখিত রগসমূহ কাটার ব্যাপারেবিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবেঃ
(ক) শ্বাসনালী (খ) খাদ্যনালী এবং (গ) রক্ত চলাচলের নালীদ্বয়। বক্ষস্থলহতে গলদেশের মধ্যবর্তী কোন স্থানে জবেহ করা বাঞ্চনীয়। জবেহ’র পূর্বে ছুরিখুব ধারালো করে নিতে হবে। তারপর কোরবানির পশুর মাথা দক্ষিণ এবং পেছনের দিকউত্তর দিকে রেখে কেবলামুখী করে শায়িত করে দোয়া পড়বেন।

দোয়াঃ
“ইন্নী ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাত্বারাস সামাওয়াতী ওয়াল আরদা হানীফাঁও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন, ইন্না সালাতী ওয়ানুসুকী ওয়া মাহ্য়ায়া ওয়ামামা-তীলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।

আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়ালাইকা বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর”বলে কোরবানির পশু জবেহ করবেন, জবেহ করার পর পাঠ করবেন- “আল্লাহুম্মা তাক্বাব্বাল মিন্নী (অংশীদার থাকলে- ‘ওয়া মিন’বলার পর প্রত্যেকের নাম ও বাবার নাম বলবেন) কামা তাক্বাব্বালতা মিন খলীলিকা ইব্রাহীমা আলাইহিস্ সালাম ওয়াহাবীবিকা মুহাম্মদিনিল্ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।”

কোরবানি দিবসের করণীয়ঃ
হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে হুজূর আক্বদাস (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)ঈদুল ফিত্বরের দিনমিষ্টি জাতীয় কিছু আহার করে ঈদগাহে তাশরিফ নিয়ে যেতেন, কিন্তু ঈদুল আযহার দিবসে নামায আদায় না করা পর্যন্ত কিছুই আহার করতেন না। -[তিরমিজী, দারেমী ওইবনে মাজাহ]

আকিকাঃ
অনেককেই কোরবানির সাথে আকিকাও আদায় করতে দেখা যায়। আকিকা ছেলে সন্তান হলে কোরবানির পশুতে দুই অংশ আর মেয়ে সন্তান হলে এক অংশ।আকিকার অংশ পিতা-মাতা, দাদা-দাদী সবাই খেতে পারবে; কোন অসুবিধে নেই। আকিকার চামড়ার হুকূম কোরবানির চামড়ার হুকুমের আওতায় পড়বে।

সবাইকে পবিত্র ঈদ উল আযহা এর শুভেচ্ছা। আল্লাহ তায়লা হযরত ইব্রাহীম আঃ এর খাতিরে আমাদের কোরবানী কবুল করুন, আমিন। ঈদ মোবারক

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২১ আগস্ট

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)