জাতীয় শোক দিবস আজ
আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বিপথগামী কিছু সেনাসদস্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে। তবে দেশের বাইরে থাকায় এ সময় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
শোকাবহ এ দিনটি পালনে আওয়ামী লীগ এবং তার সহেযাগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসহ সরকার সমর্থক বিভিন্ন সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বেতার, টিভিসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গণমাধ্যম বিশেষ ক্রোড়পত্রসহ নিবন্ধ প্রকাশ করছে। বুধবার সরকারি ছুটি।
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ তার বাণীতে বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে সবাইকে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্য একটি সুখী-সমৃদ্ধ, উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপ থেকে দেশকে স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। একাত্তরের পরাজিত শক্তি তাকে হত্যা করে জাতির অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ত্যাগ-তিতিক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করে একটি অসা¤প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী চক্র তাকে হত্যা করে। এর মধ্য দিয়ে তারা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও অগ্রযাত্রাকে ক্ষুব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি।
জাতীয় শোক দিবস সামনে রেখে এ মাসের প্রথম দিন থেকেই আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন কর্মসূচি পালন করছে। প্রতি বছরের মতো এবারো সরকারিভাবে পালিত হচ্ছে দিবসটি। সরকারি কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসহ বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ মিশনগুলোয় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পুুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন এবং সশস্ত্র বাহিনী গার্ড অব অনার প্রদান করবে। এ ছাড়া ফাতিহা পাঠ ও মুনাজাত করা হবে। পরে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্য সদস্যদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সেখানে ফাতিহা পাঠ এবং দোয়া করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মসজিদগুলোয় বাদ জোহর বিশেষ মুনাজাত এবং মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও যথাযোগ্য মর্যাদায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় কর্মসূচির সাথে সঙ্গতি রেখে তারা কর্মসূচি পালন করবে। দেশের সব সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ জাতীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিজ নিজ কর্মসূচি পালন করবে।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১৫ আগস্ট