বামনায় শহর রক্ষা বাঁধের কাজ বন্ধ, জনমনে আতঙ্কে

বিশ্ব ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করতে পারায় বর্তমানে বন্ধ রয়েছে বরগুনার বামনায় শহর রক্ষা বাঁধের সকল কার্যক্রম। এর ফলে চরম ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে উপজেলার বিষখালী নদীর তীরের লঞ্চঘাট এলাকার বাসিন্দারা। তবে কবে নাগাদ এই কাজ পুনরায় শুরু হতে পারে সে বিষয়ে কোনো ধারণা নেই সংশ্লিষ্টদের।
জানা গেছে, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে এমারজেন্সী সাইক্লোন রিকোভার এন্ড রেক্টাশন প্রজেক্ট( ইসিআরআরপি) এর আওতায় বরগুনার বামনা উপজেলার চেঁচান থেকে বামনা লঞ্চঘাট বালুর গোলা পর্যন্ত ৭৫০ মিটার শহর রক্ষা বাঁধের ব্লক ফেলার কাজ করে ম্যাক্স ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ওই কাজ যথাসময়ে শেষ হওয়ার পরে একই প্রকল্পের আওতায় নতুন করে আরো ৩০০ মিটার কাজের অনুমোদন দেয় বিশ্ব ব্যাংক। এই কাজের ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ পায় একই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। অজ্ঞাত কারণে তারা এই কাজ শুরু না করায় পানি উন্নয়ন বোর্ড এনবিএল নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে ওই ৩০০ মিটার কাজের জন্য নিয়োগ প্রদান করে। তারা বিষখালী নদীতে প্রকল্প স্থানের কিছু অংশে বস্তা ডাম্পিংসহ কিছু ব্লক নির্মাণ করার পরে বিশ্ব ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সময় অতিক্রম করে। এর পরে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ের পরে শহর রক্ষা বাঁধের আর কোনো কাজ শুরু করেনি। এর ফলে বিষখালী নদীর ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের নদী তীরবর্তী কয়েক হাজার মানুষ।
এ বিষয়ে কলাগাছিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মোস্তফা কামাল খোকন জানান, ম্যাক্স যতটুকু কাজ করেছে তাতে বিষখালীর অনেক অংশের ভাঙ্গন রোধ হয়েছে। নতুন করে শুরু হওয়া ৩০০ মিটার শহর রক্ষা বাঁধের কাজ অর্ধেক হওয়ায় এই এলাকায় ভাঙ্গন আতঙ্ক আরো বেড়ে গেছে। পূর্বের অংশের ব্লক ফেলার কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় পানির স্রোতের চাপ লঞ্চঘাট অংশে বেশী বেড়েছে। এর ফলে বর্তমানে এই অংশে ভাঙ্গন তীব্র হয়েছে। অচিরেই পানি উন্নয়ন বোর্ড শহর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু না করলে এলাকাবাসীরা ভিটে-মাটি হারাবে।
এ প্রসঙ্গে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এনবিএল এর প্রকৌশলী মো. ফিরোজ হোসেন জানান, ম্যাক্স কাজ না করায় অনেক পরে তাদের প্রতিষ্ঠানকে এই কাজ করার অনুমোদন দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ পর্যন্ত যে টাকা বরাদ্ধ পাওয়া গেছে তা দিয়ে যতটুকু সম্ভব কাজ করা হয়েছে। এখন মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিশ্ব ব্যাংক এই প্রকল্পে আর কোনো অর্থ বরাদ্ধ না করায় এখন কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থ অনুমোদন দিয়ে এই কাজ পুনরায় শুরু করতে পারেন।
এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের প্রকল্প শেষ করার মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এনবিএল এর বামনা শহর রক্ষা বাঁধের আর কোনো কাজ করা সম্ভব নয়। তবে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এর কাজটি শেষ করার জন্য নতুন করে অর্থ বরাদ্দ হলে পুনরায় শহর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হবে।
এ বিষয়ে জানতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. হাবিবুর রহমানের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে তার দপ্তরে পাওয়া যায়নি।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১১ আগস্ট