এক প্রেমিকের জন্য একসঙ্গে তিন বান্ধবীর বিষপান!
একই স্কুলের একই ক্লাসের তিন বান্ধবী। তারা একসাথে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাদের ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের চরসাহাদিয়ার গ্রামে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে।
বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ তিন বান্ধবী (প্রেমিকা) স্থানীয় বাঁশেরবাদা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী।
কিন্তু কি কারণে তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। স্থানীয় একাধিক সুত্র ও তথ্য বলছে, এক প্রেমিকের সাথে তিন বান্ধবীর প্রেম। প্রেমিক উধাও হওয়ার খবর পেয়ে অভিমানে তারা একসাথে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। আর পুলিশ বলছে, দু’টি বিষয়ের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ায় পরিবারের লোকজনের ভয়ে লজ্জায় তারা আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে চরসাহাদিয়ার মাঠের মধ্যে ওই তিনজন একসাথে কীটনাশক বিষপান করে গোঙড়াতে থাকে। এ সময় মাঠের লোকজন শব্দ শুনে এগিয়ে যায়। তাদেরকে উদ্ধার করে দাপুনিয়া বাজারের পল্লী চিকিৎসক আব্দুস সালামের কাছে নিয়ে যায়।
পল্লী চিকিৎসক আব্দুস সালাম জানান, প্রাথমিক অবস্থায় তিনজনের বিষ পেট থেকে বের করা হয়। কিন্তু বর্ষার অবস্থা খারাপ হওয়ায় দ্রুত তাকে পরিবারের লোকজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছে। ববিতা বিষ মুক্ত হওয়ায় তাকে পরিবারের লোকজন বাসায় নিয়ে যায়। আর সঞ্চিতার অবস্থা কিছুটা খারাপ হওয়ায় তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সী বিভাগের টেলিফোন অপারেটর সঞ্চিতার ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার চিকিৎসা চলছে।
পল্লী চিকিৎসক আব্দুল সালাম বলেন, বিষপান করা তিনজনের মুখ থেকে জেনেছেন, পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ হওয়ায় পরিবারের লোকজনের ভয়ে এবং নিজেদের লজ্জায় তারা যুক্তি করে একসাথে বিষপান করেছে।
এদিকে বাঁশেরবাদা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবেমাত্র অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। শিক্ষকরা খাতা দেখছেন। কোন ফলাফল প্রকাশ হয়নি। এমনকি পরীক্ষার মূল্যায়িত কোন খাতা কোন শিক্ষার্থীকেও দেখানো হয়নি।
দাপুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ ঠান্ডু বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন, মেয়ে তিনটি একটি ছেলের সাথে বেশ কিছুদিন ধরে প্রেম করে আসছিল। আকষ্মিকভাবে ছেলেটি উধাও হয়ে যায়। এ কারণেই এই তিন স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই বিষপান করেছিল।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়েদুল হক বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তিন ছাত্রীর সাথে কথা বলেছি। বিজ্ঞান ও অংক পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ার জন্য তারা বিষপান করেছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে। প্রেম সংক্রান্ত বিষয় কিছু জানায়নি। তাই সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না।
এদিকে, স্থানীয় তথ্য ও বিশ্বস্ত সুত্র বলছে, যেহেতু পরীক্ষার রেজাল্ট বের হয়নি, সেখানে পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ায় আত্মহত্যার চেষ্টা করার তথ্য সঠিক নয়, তারা আসল ঘটনা আড়াল করতে চাইছে। আত্মহত্যার চেষ্টার পেছনে প্রেম বিষয়টিই মুল কারণ। তবে যে প্রমিকের কথা বলা হয়েছে তার নাম পরিচয় জানা যায়নি।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২৮ জুলাই