কলাপাড়ায় পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় ২ সন্তানকে হত্যাচেষ্টা!
স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় পাঁচ বছরের প্রতিবন্ধী শিশু ইয়াসিন ও ৯ মাসের শিশু সুমাইয়াকে পাষণ্ড পিতা শাহাবুদ্দিন জোমাদ্দার (৩৩) কীটনাশক খাইয়ে হত্যা চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বালিয়াতলী ইউনিয়নের কাংকুনি পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্বামীসহ আটজনের বিরুদ্ধে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছে শিশু দুটির মা সোমা আক্তার রহিমা।
গত ১৮ জুলাই কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এ মামলাটি (নং-৫০০/২০১৮) আমলে নিয়ে কলাপাড়া থানার ওসিকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করার আদেশ প্রদান করলে ২০ জুলাই কলাপাড়া থানায় মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়। মামলা নং ২০/২০১৮। মামলার অন্য আসামিরা হলেন দাদি সালেহা বেগম, চাচা মহিউদ্দিন জমাদ্দার, সালাউদ্দিন জমাদ্দার, ফুফু তানজিলা বেগম, শিল্পী বেগম, নুপুর বেগম ও নুরু গাজী।
মামলায় সোমা আক্তার উল্লেখ করেন, গত ৮ জুলাই সকাল ১১টায় দুই শিশুকে ঘরে রেখে তিনি পানি পানি আনতে বের হন।এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামিরা প্রথমে ৯ মাসের শিশু সুমাইয়ার মুখে কীটনাশক ঢেলে প্রতিবন্ধী শিশু ইয়াসিনকে বিষ খাওয়াতে থাকলে সোমা ঘরে এসে তা দেখতে পান। এ সময় শিশুরা যন্ত্রণায় ছটফট করলেও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দেয়া হয় এবং সোমাকে মারধর করা হয়। তাদের আর্তনাদ শুনে প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু ৯ জুলাই দুই শিশু অবস্থার অবনতি ঘটলে তাদের পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে ১৩ জুলাই পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকলেও আসামিরা তাদের দেখতেও আসেনি।
মামলায় সোমা আরো উল্লেখ করেন, ২০১০ সালে মার্চ মাসে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দিয়ে শাহাবুদ্দিনের সাথে তাকে বিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পরই যৌতুকের জন্য তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। মেয়ের উপর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে জামাইকে একপর্যায়ে চার লাখ টাকা প্রদান করেন তার পিতা। পরে দুই সন্তান জন্মগ্রহণ করলেও নির্যাতন থেমে থাকেনি। উল্টো বড় ছেলে প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে পিতার জমি বিক্রি করে আরো যৌতুকের টাকা এনে দিতে বলেন।
কিন্তু ওই টাকা না দেয়ায় মৌসুমী নামের এক মেয়ের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন শাহাবুদ্দিন। এ পরকীয়ায় বাধা ও জমি বিক্রি করে টাকা না দেয়ার কারণেই দুই সন্তানকে হত্যার চেষ্টা চালনো হয় বলে তিনি মামলায় উল্লেখ করেন। এমনকি তাকে শ্বশুর বাড়ি যেতে বাধা দেয়ায় বাধ্য হয়ে এক ভাগিনার বাড়িতে বর্তমানে দুই সন্তানসহ আশ্রয় নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আলমগীর হোসেন জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং দুই শিশুর বিষক্রিয়া রিপোর্টের জন্য কলাপাড়া ও পটুয়াখালী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেছেন। রিপোর্ট পাওয়ার পরই বিস্তারিত জানা যাবে।
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান ১৩ জুলাই দুই শিশুর ছাড়পত্রে ওপিসি পয়জনিং আক্রান্ত বলে উল্লেখ করেছেন। যার রেজিঃ নং ৭৭৮/৭২ ও ২৮০/২৩।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২৩ জুলাই