কাউখালীতে ৬ ছাত্রীকে ‘ভূতে ধরা’ নিয়ে তুলকালাম
রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার মৈত্রী শিশু সদনের ৬ ছাত্রীকে গত কয়েকদিন ধরে ভূতে ধরাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের বড় ডুলুপাড়ায় ২০১৩ সালে মৈত্রী শিশু সদন নামে স্থানীয় পাইছামং মেম্বার নামে এক ব্যক্তি এই শিশু সদনটি করেন। তারই ছোট ভাই অংচিনু মারমা এই শিশু সদনের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানে এই শিশু সদনটিতে ৫৬ জন অনাথ শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৪০ জন, ছাত্রী ১৯ জন। এই অনাথ ১৯ জন ছাত্রী এই শিশু সদনে থাকে। শিশু সদনের চার রুমের পাশেই একটি রুমে শিশু সদনের প্রধান শিক্ষক (ভান্তে) থাকেন। ইউএনও এএম জহিরুল হায়াত বলেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য। চিকিৎসকের কাছে না আসায় বিষয়টি সন্দেহের উদ্রেক করেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুইমিপ্র“ রোয়াজা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ওই ৬ মেয়ে শিক্ষার্থী যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে থাকতে পারে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান চৌধুরী বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি দেখেছেন। তিনি বলেন, কিছু লুকাতেই হয়তো চিকিৎসকের কাছে আনা হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার সকালে ওই শিশু সদনে গিয়ে দেখা গেছে মাটিতে গড়াগড়ি করছে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণীর ৬ শিক্ষার্থী। কবিরাজ ঝাড়ফুঁক করছেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন ও শিক্ষার্থীরা শারীরিকভাবে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এদের দুই হাত ও বাহুতে বেত্রাঘাতের জখম দেখা যাচ্ছে। শিশু সদনের প্রতিষ্ঠাতা ইউপি মেম্বার পাইচামং মারমা বলেন, ‘মেয়েদের ভূতে ধরেছে। মৌলভী ও বৈদ্য (কবিরাজ) দিয়ে ঝাড়ফুঁক দিয়ে ভূত তাড়ানোর চিকিৎসা করছি। একটু ভালো হলেই মেয়েদের হাসপাতালে নিয়ে যাব।’ শিশু সদনের প্রধান শিক্ষক অংচিনু মারমা বলেন, ‘তিনদিন ধরে অবস্থার পরিবর্তন দেখছি না। আমাকে দেখলেই মেয়েরা ভয় পাচ্ছে। মনে হচ্ছে মেয়েদের ভূতে ধরেছে। এখন বৈদ্যের চিকিৎসা চলছে। ভীত অনেক শিক্ষার্থীকে এরই মধ্যে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে গেছে।’
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২১ জুলাই