শহীদদের স্মরনে রোপণ করা গাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ
শহীদদের স্মরনে দেয়া বিদ্যালয়ের গাছ উপড়ে ফেলেছে একদল দুর্বৃত্তরা। ঘটনা ঘটেছে তালতলী উপজেলার ১৪ নং আলীরবন্দর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার। এ ঘটনা এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দুর্বৃত্তদের দ্রুত বিচার দাবী করছেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হাফিজুর হক শিকদার তালতলী থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার আলীরবন্দর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৪২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় স্থানীয় আবদুর রশিদ খান বিদ্যালয়ের নামে ৭৮ শতাংশ জমি দান করেন। ওই জমি সংলগ্ন ৫২ শতাংশ জমি সরকারী খাস খতিয়ানভুক্ত রয়েছে। এ জমিতে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে বিদ্যালয় পরিচালিত হয়ে আসছে। ২০১৭ সালে ওই বিদ্যালয়ের জমি জহিরুল খান, আইউব আলী খান, ইয়াসিন খান, জাকির খান ও সিদ্দিক খান নিজেরে দাবী করে ভোগ দখলের চেষ্টা করে আসছে। গত বুধবার সারাদেশ ব্যাপী শহীদ স্মরনে বিদ্যালয়ে গাছ রিতরন করেন সরকার। ওই বিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক ফলদ ও বনজ গাছ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফারজানা আক্তার বিতরণ করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই গাছ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা রোপন করে। চারা রোপনের দু’ঘন্টার মধ্যে ওই দুর্বৃত্তরাসহ ১৫/২০ জন দুর্বৃত্ত মিলে সকল চারা গাছ উপড়ে ফেলে। শিক্ষকরা এতে বাঁধা দিলে দুর্বৃত্তরা শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করে। এ সময় বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীসহ তিন শতাধিক লোকজন উপস্থিত থেকে ঘটনা প্রত্যক্ষ করে। পরে তালতলী থানাকে অবহিত করলে দুবৃত্তরা গাছ নিয়ে পালিয়ে যায়। ওইদিন বিকেলে তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ ফারজানা আক্তার খবর পেয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, কিছু বোঝার আগেই জহিরুল খান, আইউব আলী খান, ইয়াসিন খান, জাকির খান ও সিদ্দিক খানসহ ১৫/২০ জনে বিদ্যালয়ের জমিতে লাগানো গাছ উপড়ে ফেলে নিয়ে গেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলহাফ হোসেন মোবারক বলেন, দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে দিবালোকে এসে আমাদের হুমকি দিয়ে শহীদদের স্মরনে দেয়া গাছ উপড়ে ফেলে গাছ নিয়ে গেছে। এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবী করছি।
জহিরুল ইসলাম খান জানান, আমার জমিতে রোপিত গাছ উপড়ে ফেলেছি। আমি বিদ্যালয়ের গাছ উপড়ে ফেলিনি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হাফিজুর হক শিকদার বলেন, দুবৃত্তরা শহীদদের স্মরনে দেয়া গাছ উপড়ে ফেলে শহীদদের অবমাননা করেছে। এ বিষয়ে তালতলী থানায় দুবৃত্তদের নামে সাধারণ ডারেয়ী করেছি।
তালতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হাফিজুর হক সিকদার সাধারণ ডায়েরী করেছে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ ফারজানা আকতার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। প্রতিবেদন পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২০ জুলাই