বরগুনায় ডিসির স্বাক্ষর জাল করে চাল বরাদ্দ নেওয়ার চেষ্টা

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ১০:২৪ এএম, ১৫ জুলাই ২০১৮

বরগুনায় ডিসির স্বাক্ষর জাল করে চাল বরাদ্দ নেওয়ার চেষ্টাবরগুনায় জেলা প্রশাসক ও উপজেলা চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে সদর উপজেলায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে ২৫০ টন খয়রাতি (জিআর) চাল বরাদ্দ নেওয়ার পাঁয়তারা করেছিল একটি প্রতারক চক্র। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে এলে বরাদ্দ নিতে ব্যর্থ হয় চক্রটি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরগুনা থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্বাস হোসেন মন্টুর স্বাক্ষর জাল করে গত ২০ মে ২৫০ টন জিআর চাল বরাদ্দ চেয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং সচিব বরাবর চিঠি লেখা হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আমি বরগুনা সদর উপজেলার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান। ওই এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষ স্থানীয় সহযোগিতায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো চালায় ধারদেনা করে। এদের সাহায্য করা আমাদের সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য, তাই নিল্ফেম্ন বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে খয়রাতি (জিআর) চাল বরাদ্দ পাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষ ভাবে আবেদন করছি।’

এ চিঠিতে ৫০টি প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে, যার প্রতিটি ছিল বিভিন্ন জায়গায় বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও তবারক বিতরণ।

যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে- সদর উপজেলার চরমাইঠা হিরু মিয়ার বাড়ির পাশে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল এবং তবারক বিতরণ, চরমাইঠা পলাশের বাড়ির পাশে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও তবারক বিতরণ, নিশানবাড়িয়া এন্তাজ খানের বাড়ির পাশে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও তবারক বিতরণ। এভাবে নামে- বেনামে ৫০টি ওয়াজ মাহফিল ও তবারক বিতরণের অনুকূলে ৫ টন করে মোট ২৫০ টন চাল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. মোখলেছুর রহমানের স্বাক্ষর জাল করে গত ৩ জুন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সচিব বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধক্রমে চিঠি পৌঁছানো হয়েছে। ওই চিঠির আলোকে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. শাহজাহান গত ২৬ জুন বরগুনা জেলা প্রশাসককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বরগুনা জেলা প্রশাসকের প্রেরিত চিঠিও ওই চিঠির সঙ্গে সংযুক্ত করে দেন। এর পর চিঠিটি বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে উপস্থাপন হলে তার এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে বলে বিষয়টি প্রমাণিত হয়। তবে এ জালিয়াতি কে বা কারা করেছে তা চিহ্নিত করতে পারেনি জেলা প্রশাসন বা ত্রাণ বিভাগ। ফলে অজ্ঞাতপরিচয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ শাখায় কর্মরত বিজন চন্দ্র দাস একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

স্থানীয়দের ধারনা, বরগুনায় একটি জালিয়াত চক্র সংশ্নিষ্ট প্রকল্প কর্মকর্তাদের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ বরাদ্দের নামে এভাবে সরকারি অর্থ লুটপাট করছে। এ চক্রটিই এসব কাজের সঙ্গে জড়িত। গত বছরের ১৮ অক্টোবর সমকালের ৭-এর পাতায় ‘টিআর প্রকল্পে নয়ছয়’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট ছাপা হয়েছিল। যে প্রকল্পগুলোর সবই ছিল ভুয়া।

এ ব্যাপারে বরগুনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্বাস হোসেন মন্টু তার স্বাক্ষর জাল করে চিঠি প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জেলা প্রশাসক এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. মোখলেছুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, কে বা কারা এ জালিয়াতি করেছে তাৎক্ষণিকভাবে তা শনাক্ত করা যায়নি। তাই বেনামে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

বরগুনা থানার অফিসার ইনচার্জ এ বিষয়ে বলেন, জালিয়াত চক্রটিকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।(তথ্য সূত্রঃ সমকাল)

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১৫ জুলাই

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)