ঝালকাঠিতে ছাত্রলীগ নেত্রী স্ত্রীর মর্যাদা চাইতে গিয়ে লাঞ্ছিত
স্ত্রীর মর্যাদা চাইতে গিয়ে ঝালকাঠি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার মো. শাহ আলম ও তার স্ত্রীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারজানা ববি নাদিরা (২৫)। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
বুধবার (১১জুলাই) দুপুরে ঝালকাঠি জেলা পরিষদ কার্যালয়ে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে জানা যায়, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন খানের মেয়ে ফারজানা ববি নাদিরা ঝালকাঠি জেলা পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। এই সুবাধে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ-আলমের সঙ্গে নাদিরার বিশেষ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নাদিরার অভিযোগ সরদার মো. শাহ আলম গত তিন বছর ধরে তাকে স্ত্রীর মত ব্যবহার করলেও তাকে আইনগতভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দিচ্ছিলেন না। গত কয়েকদিন ধরে নাদিরা সরদার মো. শাহ আলমের কাছে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। বুধবার দুপর ১২ টায় নাদিরা জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান সরদার শাহ আলমের কক্ষে অবস্থান নিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে।
এক পর্যায় খবর পেয়ে বিকেল তিনটার দিকে জেলা পরিষদে হাজির হন সরদার শাহ আলমের স্ত্রী জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী শাহানা আলম। তিনি সরদার শাহ আলমের কক্ষে ঢুকেই নাদিরাকে দেখতে পান। নাদিরার ওপর চড়াও হয়ে চড় থাপ্পর মারেন শাহানা আলম। এক পর্যায় তাকে মারতে মারতে রুম থেকে বের করা হয়। এ সময় বেশ কিছু লোকজন ও সাংবাদিকরা উপস্থিত হন।
পরে সরদার শাহ আলম ও শাহানা আলম গাড়িতে উঠে জেলা পরিষদ ত্যাগ করতে চাইলে নাদিরা বাধা দেয়। জোড় পূর্বক তাদের গাড়িতে উঠতে চায় সে। নাদিরাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে নাদিরা দৌঁড়ে গিয়ে জেলা পরিষদের দ্বিতীয় তলার ছাদে ওঠে। সেখান থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। স্থানীয় কিছু যুবক ও কয়েকজন যুবলীগ নেতা নাদিরাকে ধরে আত্মহত্যা থেকে রক্ষা করেন।
এ সময় নাদিরা জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায়। তাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সদর হাসপাতালের চিকিৎসাধীন ফারজানা ববি নাদিরা বলেন, আসলে আমরা মেয়েরা কারো কাছে নিরাপদ নয়। মনে করেছিলাম এই বয়স্ক লোকটার কাছে আমি নিরাপদ থাকবো কিন্তু তিনিও আমাকে ভোগের সামগ্রী বানালেন। সরদার শাহ আলমের স্ত্রীর মর্যাদা পাওয়ার জন্য আমি প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেব।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মেহেদী হাসান সাগর বলেন, নাদিরার বুকে ব্যাথা রয়েছে, শ্বাসকষ্টে ভুগছে সে। চার থাপ্পরের কারণে সে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন।
উল্লেখ্য, নাদিরা সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাইব্রেরি সাইন্সে মাস্টার্স শেষ করে ঝালকাঠির আকলিমা মোয়াজ্জেম হোসেন ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে। এ ব্যাপারে সরদার মো. শাহ-আলমের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার তার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১২ জুলাই