আমতলীতে পরকিয়া প্রেমে বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৫:৫৫ পিএম, ১ জুলাই ২০১৮

এই ছবিটি প্রতীকিপরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেয়ায় স্বামী পলাশ হাওলাদার এক সন্তানের জননী স্ত্রী বনশ্রী রানীকে গলায় রশি পেচিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার (৩০ জুন) দিবাগত রাতে আমতলী উপজেলার গোছখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বনশ্রীর বাবা সুশীল চন্দ্র মিস্ত্রির অভিযোগ জামাতা পলাশ তার পরিবারের লোকজন ও প্রেমিকা প্রিয়াঙ্কা পরিকল্পিতভাবে তার মেয়েকে গলায় রশি পেচিয়ে হত্যা করেছে। এ হত্যাকান্ডকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য গলায় কাপড় জড়িয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ঘটনার পরপর স্বামী পলাশ ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে।

জানাগেছে, পটুয়াখালী সদর উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের সুশীল চন্দ্র মিস্ত্রির কন্যা বনশ্রীকে আমতলী উপজেলার গোছখালী গ্রামের অবিরাম হাওলাদারের ছেলে পলাশের সাথে ২০১২ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকসহ বিভিন্ন অযুহাতে পলাশ স্ত্রী বনশ্রীকে নির্যাতন করে আসছে।

গত এক বছর ধরে পলাশ কলাপাড়া উপজেলার সোনাতলা গ্রামের হৃদয় সিকদারের কন্যা পুলিশের কনষ্টেবল পদে চাকুরীরত প্রিয়াঙ্কা রানীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ ঘটনা জানাজানি হলে পলাশকে তার স্ত্রী বনশ্রী প্রতিহতের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় প্রায়ই পলাশ বনশ্রীকে মারধর করতো। গত বুধবার স্ত্রী বনশ্রী জানতে পারে স্বামী পলাশ প্রেমিকা প্রিয়াঙ্কাকে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেছে।

পলাশ প্রেমিকা প্রিয়াঙ্কাকে মেনে নেয়ার জন্য স্ত্রীকে চাপ দেয়। এতে রাজি হয়নি বনশ্রী। এ নিয়ে দু’পরিবারের মাঝে সোমবার শালিশ বৈঠকে বসার কথা ছিল। শনিবার রাত ১১ টায় বনশ্রী মোবাইল ফোনে বাবা সুশীলকে স্বামী পলাশের নির্যাতনের কথা জানায়। নিহত বনশ্রী পরিবারের অভিযোগ ওইদিন রাতে পলাশ ফুটবল খেলা দেখার কথা বলে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।

বনশ্রী তার শিশু পুত্রকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। ফুটবল খেলা দেখা শেষে ঘরে ফিরে পরিকল্পিতভাবে বনশ্রীকে গলায় রশি দিয়ে পেচিয়ে হত্যা করে। পরে হত্যাকান্ডকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য কাপড় গলায় জড়িয়ে বনশ্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালায়। রবিবার পুলিশ নিহত বনশ্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় আমতলী থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নিহত বনশ্রীর বাবা সুশীল মিস্ত্রির অভিযোগ জামাতা পলাশ তার পরিবারের লোকজন ও প্রেমিকা প্রিয়াঙ্কা পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে গলায় রশি পেচিয়ে হত্যা করেছে। এ হত্যাকান্ডকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য কাপড় গলায় জড়িয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন প্রেমে বাঁধা দেয়ায় আমার মেয়েকে পলাশ হত্যা করেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার দাবী করছি।

প্রেমিকা প্রিয়াঙ্কার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

স্বামী পলাশ হাওলাদারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

আমতলী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলাউদ্দিন মিলন বলেন, হত্যা না আত্মহত্যা স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের পরে আসল রহস্য জানা যাবে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠিয়েছে।

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১ জুলাই

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)