কেন মোটা হয় বাংলাদেশী নায়িকারা?
গত কয়েকদিন ধরে শোবিজের অন্যতম আলোচিত বিষয়,‘বুবলীর স্বাস্থ্য, পোষাক ও প্রেগনেন্ট’। সেখান থেকে একটা বিষয় কিন্তু সবাই খেয়াল করতে পারেন। বুবলীর স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ সিনেমার পরিচালকও। স্বাস্থ্যর সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি পোষাক। স্বাস্থ্য থাকা ভালো। তবে সেটা সুস্বাস্থ্য। সেলিব্রেটিরা সাধারণ মানুষের আইডল হয়ে থাকেন। সেলিব্রিটিদের পোশাক-আশাক, চলাফেরা ফলো করে সাধারন মানুষ।
কিন্তু বাংলাদেশি নায়িকাদের স্বাস্থ্য দেখে একটা প্রশ্ন আসে, ‘তারা এত মোটা কেন?’ শুধু যে সিনেমার ক্ষেত্রে তা নয়, ছোটপর্দারও একই হাল। তাজিন আহমেদ মারা গিয়েছেন। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,‘শ্বাসের কষ্ঠের জন্য ইনজেকশন নিতে হত। যা তাকে মোটা করে দিয়েছে। আর এর ফলে একটা সময়ে তিনি কাজও পেতেন না।’ ব্যাপারটা খুবই দু:খজনক। তবে সবার ক্ষেত্রে তো এই এক কথা প্রযোজ্য নয়। ইচ্ছে করেই ডায়েট করেন না নায়িকারা। নাটক সিনেমার মাধ্যমে যে আয় করে, তার অনেকটা বাহিরের দেশের শিল্পীরা খরচ করে নিজেকে ধরে রাখার জন্য।
প্রশ্ন হচ্ছে, এত মোটা নায়িকা নির্মাতা নিচ্ছেন কেন? এমন প্রশ্ন দেখে পরিচালক হয়তো বলবেন, মোটা হলেই কী তারা মানুষ না। না ভাই, তারা সাধারণ মানুষ না, তাঁরা সেলিব্রিটি। পাশের দেশ ভারতের দিকে তাকান। সবকিছুতেই তো তাদের আইডল মনে করেন। তাহলে এক্ষেত্রে নয় কেন! মা হয়ে ফিরলেন কারিনা কাপুর, ঐশ্বরিয়া, রানীরা। বোঝার উপায় আছে কার? কাজল, শিল্পা, মাধুরিদের দেখলে কে বলবেন তাঁদের বয়স চল্লিশের কোঠায়! আমাদের দেশের মৌসুমী, শাবনুর, অপু এক একজন আফসোসের নাম।
বলিউডের আবার অনেকেই আছেন যারা জিরো সাইজ অনুসরণ করেননি। যেমন, সোনাক্ষি সিনহা, বিদ্যা বালানসহ আরও কিছু নায়িকা। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় এক-চতুর্থাংশ নারী মুটিয়ে গেছেন। আমাদের দেশে কী হয়? একজনের সঙ্গে আরেকজন পাল্লা দিয়ে মোটা হচ্ছে। সেভাবে আবার তাঁরা কলেজ যাওয়ার ড্রেস পরে। প্রেম করে। রেস্টুরেন্টে গিয়ে কফি খায়। ছোট টাইট ড্রেস পড়ে নাচানাচি করে।
এই স্থূলকায় স্বাস্থ্যবতী মেয়েদেরই কেন এত চাহিদা? পেশাগত কারণে প্রশ্নটা করা হয়েছিল সিনেমাসংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনকে। একজন জনপ্রিয় নায়িকার উত্তর ছিল-‘আমি যখন প্রথম আসি বেশ স্লিম ছিলাম,কিন্তু আমাদের দেশের সিনেমার সাধারণ দর্শক চায় নায়িকা একটু মোটা হলে ভালো হয়,তাই আমি ইছেকরেই মোটা হয়েছি,এছাড়া অন্য কিছু নয়।’ কিন্তু মাঝেমধ্যেই মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে ব্যাপারটা।
সহজ করে কেউ যদি ব্যাপারটা দেখেন, চর্বি আর কোলষ্টেরলমুক্ত ডায়েট নিয়ন্ত্রণ করার মত খাবারমেন্যূ আর শারীরিক কাঠামো নিয়ন্ত্রনে রাখার মত নিয়মিত জিমে যাওয়া। স্বাবলম্বী আর উপার্জনক্ষম এই নায়িকারা যেটা করে না। রুচিশীল দর্শকের চাহিদা মেটাতে চাইলে কাল থেকেই নিরলসভাবে ব্যায়াম শুরু করে দিতে পারে,কিন্তু এতে তাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। কারণ তারা ভালো করেই জানে তাঁরা কাদের মনে স্বপ্নের রানী হয়ে টিকে আছেন। আর এই সহজ ব্যাপারটি তথাকথিত বিশেষ রুচিশীল মানে ড্রইংরুম কেন্দ্রিক দর্শক অনেকেই বুঝতে চাননা।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২২ জুন