অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে বদলি হলেন ইউএনও
অনলাইন ডেস্কঃ
সরকারি জায়গা দখল করে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে বদলি হতে হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিরুল কায়ছারকে। বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার (সার্বিক) মোমিনুর রশিদ আমিন স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে বান্দরবান পার্বত্য জেলার আলীকদম উপজেলায় বদলি করা হয়।
এদিকে ইউএনও’কে বদলি করা হয়েছে জানতে পেরে সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
জানা গেছে, আশুগঞ্জে ২০১৬ সালে ১২ জুন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা হিসাবে যোগ দেন আমিরুল কায়ছার। এরপর থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার সক্রিয় ভূমিকা স্থানীয়দের মাঝে প্রশংসিত হয়েছে। সম্প্রতি উপজেলার সরকারি কাচারি পুকুরের পাশে দখলে থাকা সরকারি জায়গা উদ্ধার করতে গিয়ে প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়েন কায়ছার। বেশ কয়েকটি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও তিনজন প্রভাবশালী ব্যক্তির দখলে থাকা জমি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
তিন প্রভাবশালী ব্যক্তি হলেন দুর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল করিম খান সাজু, জেলা ধান-চাল ব্যবসায়ী সমিতি সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম স্বপন ভুইয়া এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে বিমান ক্রয় দুর্নীতি মামলার অন্যতম আসামি আব্বাস উদ্দিন খান।
গত বছরের ১৫ জুলাই শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযান সম্প্রতি আবারও পরিচালনার উদ্যোগ নিলে ইউএনও’কে বান্দরবানে পাঠানোর হুমকি দেন চেয়ারম্যান সাজু। এরপরই বৃহস্পতিবার কায়ছারকে বান্দরবান পার্বত্য জেলার আলীকদম উপজেলায় বদলির আদেশ আসে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, এর আগে কায়ছারের বিরুদ্ধে তৈরি করা এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি সরকারবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত।
তবে বদলির পর তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা কায়ছারকে স্বপদে রাখার জন্য সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার পাঠিয়েছেন। জিয়াউল হক মৃধা এমপি বলেন, কায়ছারের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। আমি এর নিন্দা জানাচ্ছি।
এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদও কায়ছারের বদলির প্রতিবাদ জানিয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক হাজী মো. ছফিউল্লাহ বলেন, তার বিরুদ্ধে সরকার বিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। তার কাছ থেকে এলাকার উন্নয়নে সকল সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি। সরকারের প্রতিটি কর্মসূচিতেও তিনি আমাদের সহায়তা করে যাচ্ছেন। প্রতিবেদনে যদি উল্লেখ করা হয় তিনি সরকারি আদেশ মানেনি, তাহলে তা মিথ্যা।
নিজের বদলির বিষয়ে আমিরুল কায়ছার বলেন, বদলির আদেশ হাতে পেয়েছি। সরকারি চাকরিতে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এখানে অন্যকিছু আছে কিনা আমি জানি না।