আমতলীতে নির্যাতনে মানসিক ভারসাম্য হারাল স্ত্রী
যৌতুকের জন্য নাসরিন বেগম (৩০) নামের এক সন্তানের জননী গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত গৃহবধূকে পুলিশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
রোববার (১০ জুন) রাতে ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামে। এ ঘটনায় স্ত্রী বিচার দাবি করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কুকুয়া গ্রামের আবদুল হক মিয়ার মেয়ে নাসরিন বেগমের ২০০৮ সালে পার্শ্ববর্তী হলদিয়া ইউনিয়নের তক্তাবুনিয়া গ্রামের সাহাব উদ্দিন স্বপনের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে সাহাব উদ্দিনকে ৫ ভরি স্বর্ণালংকারসহ সাংসারিক প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রসহ নগদ ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়। ২০১০ সালে সাহাব উদ্দিনের বরিশাল পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে চাকরি হয়। চাকরি হওয়ার পর থেকে নেমে আসে নাসরিনের ওপর অসহনীয় নির্যাতন। ২০১২ সালে আমতলীতে জমি কেনার জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে তিন লাখ টাকা এনে দিতে বলে নাসরিনকে। নাসরিন এতে রাজি হয়নি। এরপরে নেমে আসে মধ্যযুগীয় কায়দার নির্যাতন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মেয়ের সুখের জন্য শ্বশুর আবদুল হক জামাতাকে তিন লাখ টাকা যৌতুক দেন। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে আবারও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় স্বামী নির্যাতন চালায় নাসরিনের ওপর। স্বামী সাহাব উদ্দিনের মধযুগীয় অমানুষিক নির্যাতনে এ বছর ১০ ফেব্রুয়ারি নাসরিন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। পরে নাসরিনকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক বিভাগে প্রেরণ করেন। ওই হাসাপাতালে গত তিন মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন নাসরিন। চিকিৎসা শেষে এ বছর মে মাসে নাসরিন স্বামীর বরিশালের বাসায় এলে ক্ষিপ্ত হয় স্বামী সাহাব উদ্দিন। পরে নাসরিনকে বেধড়ক মারধর করে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়। গত ১৫ দিন ধরে নাসরিন বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। রোববার সন্ধ্যায় শাশুড়ি সাজেদা আক্তার সাজুর অনুরোধে নাসরিন স্বামীর গ্রামের বাড়িতে যান। বাড়ি পৌঁছামাত্রই স্বামী, শ্বশুর বজলু হাওলাদার নাসরিন বেগমকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। নাসরিন প্রাণ রক্ষায় পার্শ্ববর্তী বাড়িতে আশ্রয় নেন।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১২ জুন