বরিশাল ও গোপালগঞ্জ জোনে ১২টি লং লিস্ট সেতু নির্মাণ প্রস্তাব
অনলাইন ডেস্কঃ
ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পে ৬০টি সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। কাজ শুরুর পর দেখা গেল- প্রায় ৯০০ কোটি টাকা অব্যবহূত থাকছে। এ টাকায় আরও ২৪টি ‘অতিরিক্ত সেতু’ নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
ব্যয় কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে সর্বোচ্চ দক্ষতার সঙ্গে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন, আনুষঙ্গিক ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্ব্বন ও ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় হ্রাস পাওয়ার কথা বলছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে- দেশের পশ্চিমাঞ্চলে পুরনো, ক্ষতিগ্রস্ত ও অপ্রশস্ত সেতু উন্নয়নের জন্য পরীক্ষামূলক সমীক্ষা চালায় জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)।
তারা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল ও গোপালগঞ্জ জোনে ১০৬টি লং লিস্ট সেতু নির্মাণের জন্য চিহ্নিত করে। সেখান থেকে প্রাথমিকভাবে ৬০টি সেতু নির্বাচনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে জাইকা।
জাইকার সুপারিশের আলোকে ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন হয়। প্রকল্পের ৬১টি সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। মেয়াদ ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। একনেকে অনুমোদনের সময় ৬১টি সেতু নির্মাণের কথা থাকলেও নির্মাণ হচ্ছে ৬০টি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ওয়ার্ক অর্ডার চুক্তি সম্পাদনের পর দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৯০০ কোটি টাকা অব্যবহূত থাকছে। প্রকল্প কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ৬০টি সেতু নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় ৪৩৪ কোটি টাকা ধরা হলেও ব্যয় হতে পারে ২৩৪ কোটি টাকা।
অন্যদিকে পরামর্শক বাবদ ব্যয় হচ্ছে- ২৫০ কোটি টাকা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা, সম্পদ সংগ্রহ, সরবরাহ ও সেবা, মেরামত ও সংরক্ষণ, কনটিনজেন্সিসহ আনুষঙ্গিক খাতগুলোয় ব্যয় হচ্ছে আরও প্রায় ১৭০ কোটি টাকা। সবমিলে ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। অব্যবহূত থাকছে ৯০০ কোটি টাকা।
ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বেঁচে যাওয়া প্রায় ২০০ কোটি টাকায় মাগুরা ও যশোর মহাসড়কে দুটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন কর্মকর্তারা। একইভাবে বাকি টাকায় আরো ২২টি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী ও রংপুর জোনে ১০ এবং খুলনা, বরিশাল ও গোপালগঞ্জ জোনে ১২টি সেতুর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। জাইকার চিহ্নিত ১০৬টি লং লিস্ট সেতুর মধ্যেই অতিরিক্ত সেতুগুলো নির্মাণ করা হবে।
২৪টি ‘অতিরিক্ত সেতু’ নির্মাণের জন্য এরই মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সংশোধন করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা। তারা বলেন, বিচক্ষণতার সঙ্গে ঠিকাদার নিয়োগ, আনুষঙ্গিক ব্যয়গুলো সতর্কতার সঙ্গে নির্বাহ ও ভূমি অধিগ্রহণ কম হওয়ায় প্র্রাক্কলনের তুলনায় ব্যয় অনেক কমে এসেছে।
এ বিষয়ে ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ জাওয়েদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, সব ধরনের ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছি। এ কারণে প্রকল্পে বড় অংকের অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। বেঁচে যাওয়া টাকায় আমরা আরো ২৪টি সেতুর প্রস্তাব করেছি। সম্প্রতি এর সংশোধিত ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে যাচাই-বাছাই শেষে অনুমোদনের পর অতিরিক্ত সেতুগুলোর কাজ শুরু হবে।
তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয় ও সরকার। যাচাই-বাছাইয়ের পর অতিরিক্ত সেতু সংখ্যা বাড়তে বা কমতে পারে, আবার অপরিবর্তিতও থাকতে পারে।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২৮ ফেব্রুয়ারি