বালিঘর’ কেন ছেড়েছেন তিশা
এ বছর ২০ জানুয়ারি ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ধুমধাম করে ‘বালিঘর’ ছবির মহরত হয়। যৌথ প্রযোজনার এই ছবির মহরত হয়েছে কলকাতায়। দুটি অনুষ্ঠানেই অংশ নেন বাংলাদেশ ও ভারতের অভিনয়শিল্পীরা। তখন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ক্রিয়েশনস আর পরিচালক অরিন্দম শীলের কাছ থেকে জানা যায়, ‘বালিঘর’ ছবির গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করবেন তিশা। এবার জানা গেল, তিশা এই ছবিতে কাজ করতে পারছেন না। কেন? তিশা কেন এই ছবিতে কাজ করতে পারছেন না, আজ সোমবার দুপুরে তা জানালেন প্রথম আলোকে।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘বালিঘর’ ছবিটি যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হচ্ছে। ছবিটির বাংলাদেশ অংশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ক্রিয়েশনস আর ভারতের নাথিং বিয়ন্ড সিনেমা। এই ছবির সংগীত পরিচালনা করবে বাংলাদেশের চিরকুট আর ভারতের বিক্রম ঘোষ। ছবিতে অভিনয় করছেন বাংলাদেশ থেকে আরিফিন শুভ, তিশা, নওশাবা আর ভারত থেকে আবির চট্টোপাধ্যায়, পার্ণো মিত্র, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য প্রমুখ। গত মার্চ মাসে ছবিটির শুটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল। এবার জানা গেছে, ছবিটির শুটিং শুরু হবে এ বছর সেপ্টেম্বরে। শুটিংয়ের তারিখ পরিবর্তন হওয়া নাকি কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তিশার। জানালেন, ওই সময় অন্য কাজের জন্য সময় চূড়ান্ত করে রেখেছেন তিনি।
‘বালিঘর’ ছবিটি ছেড়ে দেওয়ার কারণ জানিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে আজ দুপুরে একটি পোস্ট লেখেন তিশা। সেখানে তিশা লিখেছেন, ‘আমার ভক্ত এবং দর্শক ভাইবোনদের উদ্দেশে একটি তথ্য জানিয়ে রাখতে চাই, যাতে ভবিষ্যতে কোনো ভুল-বোঝাবুঝি আর গুজব তৈরির সুযোগ না থাকে। কলকাতার বিশিষ্ট পরিচালক অরিন্দম শীলের “বালিঘর” ছবিটি আমি আর করছি না। শিডিউলের জটিলতার কারণে আমি সেই ছবি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ বিষয়ে পরিচালকের সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। আমরা সকল প্রকার সৌজন্য বজায় রেখেই একমত হয়েছি। আমি ছবিটার জন্য শুভকামনা জানাচ্ছি।’
‘বালিঘর’ ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর অনুভূতি জানাতে গিয়ে নিজের ভালো লাগার কথা বলেছিলেন তিশা। কিন্তু এখন ছবিটি করছেন না বলে খারাপও লাগছে তিশার। বললেন, ‘একটি ভালো কাজের সঙ্গে থাকার ইচ্ছা থেকে ছবিটিতে যুক্ত হয়েছিলাম। এখন যেহেতু আর পারছি না, তাই খারাপ লাগছে। তবে পুরো কাজটির জন্য আমার শুভকামনা রইল।’
‘বালিঘর’ ছবিতে তিশাকে অভিনয়শিল্পী হিসেবে পেয়ে খুশি হয়েছিলেন পরিচালক অরিন্দম শীল। তিশা সম্পর্কে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি যখন যৌথভাবে ছবি বানাব বলে ঠিক করেছি, শুরু থেকেই একজনকে ঠিক করে রেখেছিলাম। সে হচ্ছে তিশা। আমি তিশার অনেক দিনের ভক্ত। তার অভিনীত “থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার” ও “টেলিভিশন” ছবি দেখেছি। আমি পরিচালনায় এসেছি ২০১৩ সালে। এরই মধ্যে আটটা ছবি মুক্তি পেয়েছে। তিশার মতো শিল্পীরা, যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে, তাদের নিয়ে কাজ করতে পারার অভিজ্ঞতা দারুণ।’
তিশাকে নিয়ে কাজ করতে না পারায় অরিন্দম শীলের মনেও দুঃখবোধ কাজ করছে। প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে আজ দুপুরে ভারতের এই পরিচালক বললেন, ‘আমার দুর্ভাগ্য যে আমি ওর সঙ্গে কাজ করতে পারছি না। এর বেশি আর কিছু বলতে পারছি না।’
কী এমন শিডিউল জটিলতা? তিশা বলেন, ‘ওই সময় দেশের বাইরে আমার শো আছে। কয়েকটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের জন্য শিডিউল দেওয়া আছে। এ ছাড়া দেশের বাইরে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। সবকিছু এমনভাবে শিডিউল করা যে নতুনভাবে শিডিউল করা মোটেও সম্ভব নয়।’
‘বালিঘর’ ছবির গল্প প্রসঙ্গে অরিন্দম শীল বলেন, ‘আমার নবম ছবিটি সাত বন্ধুর সম্পর্কের গল্প নিয়ে। ছবিতে দেখা যাবে, সাত বন্ধু ১২ বছর পর একসঙ্গে হয়েছে। তার মধ্যে দুজন ঢাকার, পাঁচজন কলকাতার। তারা বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত। শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করা এই বন্ধুদের বন্ধুত্বের প্রধান শক্তি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। অথচ এক যুগ পর দেখা হওয়া এই বন্ধুদের সেই তিন-চার দিনের মুখোশ আর মুখোশের আড়ালের সম্পর্কগুলো তীব্রভাবে বেরিয়ে আসে। এটাই আমার নতুন চলচ্চিত্রের পটভূমি।
এ এম বি । পি এন । সুত্রঃ প্রথম আলো