৬টির বেশি সেলফি তুললেই সে ‘সেলফাইটিস’ রোগী

অনলাইন ডেস্কঃ
মোবাইলে সেলফি তুলতে কার না ভালো লাগে? সুন্দর একটি পরিবেশে স্মার্টফোন হাতে নিয়ে শুধু একটা ক্লিক- এর পর হয়ে গেল সিলফি। হয়ে গেল আপনার আবেগঘন মুহূর্তটি মোবাইলে বন্দি।
মোবাইল ফোনে সেলফি তোলা অনেকেরই প্রিয়। কিন্তু আপনি জানেন কি? ৬টির বেশি সেলফি তুললে ‘সেলফাইটিস’ রোগী হিসেবে গণ্য করা হয়। তা হলে এখন প্রশ্ন হল- জুনায়েদ আহমেদকে কি বলা যাবে?
২২ বছর বয়স্ক জুনায়েদ আহমেদ থাকেন ইংল্যান্ডের এসেক্স কাউন্টিতে। প্রতিদিন প্রায় ২০০টি সেরফি তোলেন তিনি।
এখন প্রশ্ন হল, কত প্রিয় হলে সেলফি তোলা ‘নেশা’ হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত?
গবেষকরা বলছেন, সেলফি তোলার আসক্তি সত্যি সত্যিই একটা ‘সমস্যা’ এবং আপনি যদি দিনে ৬টির বেশি সেলফি তোলা এবং তা সামাজিকমাধ্যমে আপলোড করার তাড়নাবোধ করেন? তা হলে বলতে হবে আপনার ক্রনিক ‘সেলফাইটিস’ হয়েছে।
এ নিয়ে সম্প্রতি দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইংল্যান্ডের নটিংহ্যাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভারতের থিয়াগারাজার স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট মিলে একটি জরিপ করেছেন।
২২ বছর বয়স্ক জুনায়েদ আহমেদের ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার বা অনুসারী আছে ৫০ হাজার। তিনি কখন সেলফি পোস্ট করবেন সেই সময়টিও ঠিক করেন খুব ভেবেচিন্তে- যাতে যত বেশি সম্ভব ‘লাইক’ পাওয়া যায়।
যদি কোনো সেলফি ৬০০-র কম লাইক পায়, তা হলে সেটি তিনি ‘ডিলিট’ করেন বা মুছে দেন।
তিনি নিজেই স্বীকার করেন যে তিনি সেলফিতে আসক্ত।
জুনায়েদ আহমেদ বলেন, আমি যখন একটি সেলফি পোস্ট করি, প্রথম ২/১ মিনিটের মধ্যে আমি ১০০-র মতো লাইক পাই। আমার ফোনটার মাথা খারাপ হয়ে যায়। সে এক দারুণ ব্যাপার।
এখন সেলফির জন্য তিনি তার নিজের চেহারাও ‘আপগ্রেড’ করেছেন বা উন্নতি ঘটিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি আমার দাঁত সাদা করিয়েছি। চিবুক, চোয়াল, ঠোঁট ও গাল ভরাট করিয়েছি। চোখ ও চুলে বটক্স লাগিয়েছি। ভ্রুতে ট্যাঁটু করিয়েছি এবং চর্বি জমা থামিয়েছি।
ড্যানি বোম্যানও (২৩) সেলফি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে দিতে আসক্তির শিকার হয়েছিলেন।
তিনি আয়নার সামনে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাটিয়েছেন; ক্রমাগত সেলফি তোলার জন্য। আর সব ছবিতেই তিনি তার চেহারার ত্রুটি খুঁজে পেতেন।
তিনি একসময় আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন। এর পর রিহ্যাবে যান। তিনি মনে করেন তার দেহ নিয়ে হীনমন্যতার সমস্যা তৈরিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি বড় ভূমিকা ছিল।
ব্রিটেনের জনস্বাস্থ্যবিষয়ক রয়্যাল সোসাইটি এখন সরকার ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা এমন ব্যবস্থা করে যাতে একটানা ২ ঘণ্টা অনলাইনে কাটালেই তার ফোনে একটা বার্তা দিয়ে তাকে সতর্ক করা হয়।
সোসাইটি বলছে, সামাজিকমাধ্যম কীভাবে তরুণদের ওপর প্রভাব ফেলছে, তাদের মধ্যে বিষণ্নতা ও দুশ্চিন্তা তৈরি করছে, তা নিয়ে গবেষণার পর তারা এ আহ্বান জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২৮ ফেব্রুয়ারি