ধর্ষণে প্রমোশন !

রুদ্র রুহান (বরগুনা): শিক্ষকের নাম আবুল বাশার। সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিনি চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। ওই সময় তিনি নিজেই দোষ স্বীকার করেন এবং ব্যবস্থপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।এ ঘটনার ১৬ বছর পর একই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। এতে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ওই এলাকার বাসিন্দারা বলতে শুরু করেছেন, ধর্ষণে প্রমোশন!
বরগুনা সদর উপজেলার গর্জনবুনিয়া স্কুল এন্ড কলেজে আবুল বাশার নামে ওই শিক্ষকে সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঘুষ বানিজ্য, প্রশ্ন ফাঁস ও পরীক্ষা পদ্ধতিতে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ এনে বরগুনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন এবং আদালতে মামলা দায়ের করেছে একই এলাকার আনোয়ার হোসেন।
গত ২৭ মে আনোয়ার বাদি হয়ে ৯জনকে বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন আনোয়ার। আদালতের বিচারক তাইজুল ইসলাম মামলা গ্রহন করে দুই কার্য দিবসের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র আদালতে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।
মামলার অন্য বিবাদীরা হলেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: আঃ ওহাব মিয়া, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ কমিটিতে ডিজির প্রতিনিধি সৈয়দ আহম্মেদ, বরগুনা সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, নিয়োগ কমিটির সদস্য ফখরুল ইসলাম, বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, বিদ্যালয়ে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ধর্ষণের অভিযুক্ত মো: আবুল বাশার, বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিদ্যালয় পরিদর্শক, পরিচালক এবং মহাপরিচালক।
বাদীর অভিযোগ, গত ২৪ মে গর্জনবুনিয়া স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সকাল ১০টায় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত পরীক্ষার রাতেই প্রশ্নপত্র সরবরাহ, খাতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করা, নিয়োগ কমিটিকে মোটা অঙ্কের অর্থ প্রদানসহ নানা অভিযোগ আনা হয়। এসব অভিযোগসহ ওইদিন (২৪ মে) রাতে বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।তাতে বলা হয় ২০০২ সালে মো: আবুল বাশার একই বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর এক হিন্দু ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক চাকুরিচ্যুত হন এবং ওই সময় তিনি তার দোষ স্বীকার করেন। কিন্তু বর্তমানে একই ব্যক্তিকে ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো: আবুল বাশার বলেন, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে এসবের কোন ভিত্তি নাই। এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।
গর্জনবুনিয়া স্কুল এন্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও নলটোনা ইউপি চেয়ারম্যাম মো: হুমায়ূন কবির বলেন, সকল নিয়ম কানুন মেনেই নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার গর্জনবুনিয়া স্কুল থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর পাথরঘাটা উপজেলার তাসলিমা মেমোরিলায় একাডেমিতে বিএসসি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।