বরিশালের ৯ টি আসনে আ.লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত !
দিন যত গড়াচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আলোচনা ততই সামনে চলে আসছে। তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচন নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। এমনকি কোন দলে কে পেতে পারেন মনোনয়ন সেসব নিয়েও আলোচনা কম হচ্ছে না। ভোটারদের আলোচনা যেমন চলছে তেমনি বসে নেই রাজনৈতিক দলগুলো।
বিগত নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহন না করলেও এবার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন বলে নেতাদের কথায় আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ওদিকে ক্ষমতাশীন দল আ’লীগ ইতিমধ্যে তাদের প্রার্থী যাছাই বাছাই শুরু করে দিয়েছে। যোগ্য প্রার্থীর খোঁজে বিভাগীয় টিম গঠন করে দিয়েছে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, সাংগঠনিক সফর ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করে কিছু এমপিকে মনোনয়নের জন্য মনোনীত করেছে কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড। আর এই বিষয়টি সরাসরি তত্ত্বাবধান করছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা পৌছেছে তার হাতে। সেখান থেকে দশম সংসদের ২৩৪ দলীয় এমপি থেকে ১০০ জনপ্রিয় নেতাকে ফের মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর সঙ্গে যুক্ত হবে আরও ৫০ জনের নাম।
তারই ধারাবাহিকতায় এখন পর্যন্ত যাছাই বাছাইতে উত্তীর্ণ কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থীদের গ্রীন সিগন্যাল দিয়েছে কেন্দ্র। সিগন্যালপ্রাপ্ত প্রার্থীরা ইতিমধ্যে নিজ এলাকায় কাজ শুরু করেছেন। জানা গেছে, বরিশাল বিভাগে ৮জন এমপি (প্রার্থী) ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের ইতিবাচক সংকেত পেয়েছেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, জনসম্পৃক্ত, দেশ ও নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে কাজ করা এবং প্রভাব খাটিয়ে ফায়দা হাসিল যারা করেননি তারাই কেন্দ্রর প্রথম পরীক্ষায় নির্ভরতা অর্জন করায় মনোনয়নের জন্য মনোনীত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এবার ‘গডফাদার’ ও ‘জনবিচ্ছিন্ন’ সংসদ সদস্যদের মনোনয়ন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেসব এমপির বিরুদ্ধে এলাকায় খুন, দুর্নীতি, মাদক ব্যবসা, ঋণ খেলাপি, টেন্ডার-চাঁদাবাজিসহ দখলদারিত্বের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তারা কেউ মনোনয়ন পাবেন না।
এসব প্রার্থীদের আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন জুটছে না বলেই আভাস দিচ্ছেন ক্ষমতাসীন পার্টির নীতিনির্ধারকরা। দল ও সরকারের ইমেজ ক্ষুণ্নকারীরা আছেন বাদ পড়ার তালিকায়। এসব আসনে সন্ধান করা হচ্ছে নতুন মুখ। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিতর্কিত ও নেতিবাচক ইমেজধারী এমপি শনাক্তে কাজ করছে কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা। অনেকের রিপোর্ট এখন শেখ হাসিনার হাতে। ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের তালিকার কাজ শেষ হয়েছে। অভিযুক্তদের অনেকেই আইনের আওতায় আছেন।
বাকিদের বিরুদ্ধেও আইনি প্রক্রিয়া চলছে। প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী বেসরকারি সংস্থা ও সরকারি গোয়েন্দারা সমালোচিত মন্ত্রী-এমপিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ প্রার্থী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তাদের কারও বিরুদ্ধে এলাকায় জনপ্রিয়তা হ্রাস, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া, অনেকের বিরুদ্ধে দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, অনৈতিকভাবে বিত্তবৈভব গড়ার মতো অভিযোগ আনা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে আনা হয়েছে সন্ত্রাস ও দলীয় কোন্দল সৃষ্টির অভিযোগ।
আর এসব নেতিবাচক কর্মকান্ডের উর্ধ্বে থেকে মনোনয়নের জন্য মনোনীত বরিশাল বিভাগের ৯ জন হলেন, বরিশাল-১ আসনের আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, বরিশাল ২ আসনের তালুকদার মো: ইউনুস, বরগুনা-১ আসনের ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, পটুয়াখালী-২ আসনের আ.স.ম ফিরোজ, ভোলা-১ আসনে তোফায়েল আহম্মেদ, ভোলা-২ আসনে আলী আজম মুকুল, ভোলা-৩ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, ভোলা-৪ আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং ঝালকাঠি-২ আসনে আমির হোসেন আমু। এছাড়াও দলের সাংগঠনিক সফরে থাকা ১৫টি টিমের হালনাগাদ তথ্য সংযোজিত হচ্ছে মূল তালিকায়।
দলীয় সভাপতির নির্দেশে সাংগঠনিক সম্পাদকরা ও কয়েকটি বিশেষ টিম আসন ধরে ধরে প্রার্থীদের বায়োডাটা সংগ্রহ করছেন। সেগুলো পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করেছে। আওয়ামী লীগ জরিপ টিমের সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে গত দেড় বছর ধরে ৩ মাস পরপর মাঠ জরিপ করছেন।
সেখানে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে আলোচিত-সমালোচিত মন্ত্রী-এমপিদের নাম উঠে এসেছে। সেসব প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই সিগন্যাল পেয়েছে বরিশালের উল্লেখিত এমপিরা।
সুত্রঃbarisaltribune