খেঁজুর গাছের ৭ মাথা, একনজর দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড়
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আকোটেরচর ইউনিয়নের মনিকোঠা এলাকায় রাস্তার পাঁশে সাতটি মাথা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি খেঁজুর গাছ। এই গাছটি দেখতে বিভিন্ন সময় দর্শণার্থীরা ভির করেন। স্থানীয়দের কাছে এটি প্রকৃতির খেয়াল। অবশ্য দেশের আরো কয়েকটি জায়গায় এমন একাধিক মাথাবিশিষ্ট খেজুর গাছ রয়েছে।
বাংলাদেশে দেশি জাতের এ খেঁজুর গাছ থেকে রস ও খেঁজুর পাওয়া যায়। বাণিজ্যিকভাবে খেঁজুরের তেমন বাজার না থাকলেও খেজুরের রসে তৈরি সুমিষ্ট খেঁজুরের গুড় দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমাদৃত। আখের রসে তৈরি মিলের চিনির চেয়ে খেঁজুর গুড় বাজারে ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি দামে বিক্রি হয়। পাটালি ছাড়াও খেঁজুর রসে তৈরি হয় বিশেষ ধরণের মধুর সাদৃশ্য ঝোলা গুড়। তবে ইটভাটার জ্বালানী হিসেবে দেশে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক খেঁজুর গাছ কেটে ভাটায় বিক্রি করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মনিকোঠা বাজারের পাঁশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তায় রয়েছে এই খেজুর গাছটি। গাছটি সরকারি রাস্তায়। এখনও ইটভাটার খোরাক হয়নি।
আকোটের চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল হক চৌধুরী বিডিমর্নিংকে বলেন, গাছটি কে কবে লাগিয়েছিলো তা জানা নেই। সড়কের পাঁশে সরকারি জায়গায় বেড়ে ওঠা গাছটি কবে থেকে সাত মাথায় বিস্তৃত হয়েছে তাও মনে নেই। অনেকেই গাছটি দেখতে আসেন।
মনিকোঠা গ্রামের পঞ্চান্ন বছর বয়সী শেখ ইউসুফ বলেন, গাছটির প্রকৃত বয়সও আমাদের জানা নেই। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি এই খেঁজুর গাছটি। প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ বছরের বেশি হবে এর বয়স।
স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী শ্রী ঠাকুর দাস বলেন, আগে সদরপুর উপজেলায় অনেক খেজুর গাছ থাকলেও ইট ভাটার জ্বালানী হিসেবে অনেক খেঁজুর গাছই কাটা পড়েছে। এখন আর তেমন করে খেঁজুর গাছ চোখে পড়ে না। তবে সাত মাথাবিশিষ্ট বলে হয়তো এই গাছটি কেউ কাটতে সাহস পায় না।
এ ব্যাপারে জানতে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মতিয়ার রহমানের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, অতিরিক্ত ফাইটো হরমোনের কারণে অনেক সময় এমনটি হতে পারে। সচরাচর এমনটি দেখা যায় না। ফাইটো হরমোন হচ্ছে উদ্ভিদ দেহে সৃষ্ট এমন কিছু জৈব রাসায়নিক পদার্থ যা সামান্য পরিমাণে বিদ্যমান থেকে উদ্ভিদের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। উদ্ভিদের বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করে বলে এদের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক পদার্থও বলা হয়। উদ্ভিদ দেহে সৃষ্টি হয় বলে পরবর্তীতে এদের ফাইটো হরমোন নামে অভিহিত করা হয়।