পাথরঘাটার ফতিমা পারভীন দেশের হয়ে মালয়শিয়া আন্তর্জাতিক জনসংখ্যা উন্নয়ন সম্মেলনে যাচ্ছেন
মোহাম্মাদ কাজী রাকিবঃ জাতীয় পর্যায়ের সংগঠন “নারীপক্ষ” এর উদ্যোগে এবং মালয়শিয়ায় অবস্থিত “এশিয়ান প্যাসিফিক রিসোর্স এন্ড রিসার্চ সেন্টার ফর উইমেন (ARROW)” এর আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক জনসংখ্যা উন্নয়ন সম্মেলন এর ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার বিষয়ে “SHE DECIDES” বিষয়ক আঞ্চলিক ডায়ালগ মালয়শিয়ার কুয়ালামপুরে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ থেকে পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা পারভীনকে নির্ধারণ করা হয়েছে।
আগামী ১ মার্চ মালয়শিয়ার উদ্যশ্যে তিনি রওয়ানা হবেন। সেখানে বলবেন জীবনের গল্প। জীবনযুদ্ধে কিভাবে সফল হয়েছেন সেই গল্প।
বাল্য বিবাহ তাকে দমাতে পারেনি বরং নিজের জীবনের সাথে যুদ্ধ করে লেখাপড়া করে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন জনপ্রতিনিধি। নিজের ইচ্ছেশক্তিকে কাজে লাগিয়ে গোপনে লেখাপড়া করে আজ তিনি সফল মানুষ হয়েছেন। তার জীবনের গল্প তুলে ধরে প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক জার্নাল। সমাজে নারী নির্যাতন আর কন্যা শিশুর প্রতি উদাসীনতার অবসানের বিরুদ্ধে প্রথমে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে উঠে এসেছে তার কলম। অসংখ্য কলাম আর উপন্যাস রচনা করেছেন। প্রকাশ হয়েছে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে। এছাড়াও ২০১৫ সাল থেকে তার লেখা বিভিন্ন বই প্রকাশনা হয়ে আসছে।
ফাতিমা পারভিন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধসহ পিছিয়ে পড়া নারীদের নিয়ে কাজ করেছেন। দর্জি প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ২৪২জনকে। নব্বইটি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করেছেন নিজের উদ্যোগে। সমাজে ফতোয়াবাজদের (হিল্লাবিবাহ) থেকে ৩০জন নারীকে রক্ষা করেছেন। ১০০০ নারীকে তার পরিবারে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী পরিচর্যার জন্য সচেতন করেছেন। হত্যা,ধর্ষণ,ধর্মীয় অপব্যাখ্যার বিরুদ্ধে তিনি স্কুল,কলেজ ও সাধারণ মানুষসহ তার নেটওয়ার্কের সদস্যদের নিয়ে মানববন্ধন করেছেন। তিনি “নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষক, স্বাস্থ্য সেবাদানকারীদের সাথে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন।
আন্তর্জাতিক জার্নালে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
স্থানীয়ভাবে এই আলোকিত মানুষকে জানতে চেয়ে জানা গেছে যে, বাল্যবিবাহ,নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সহ শত শত মানুষকে তিনি মামলামুক্ত করে আজ পাথরঘাটা উপজেলায় রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তিনি একজন দক্ষ রাজনীতিবিদ হিসেবেও বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন।
মুঠোফোনে ফাতিমা পারভিনের সফলতার কথার জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার মানুষ হতে চাই, তৃণমূল পর্যায়ের পিছিয়ে পড়া মানুষের প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে আরও কাজ করতে চাই, আমি বিশ্বাস করি পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নারীরা কোনদিনও উঠে আসতে পারবেনা,যদি না তারা নিজেদের পরিবর্তণ না করেন তবে অর্থনৈতিকভাবে ও নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকারে নারীকে স্বাবলম্বী না করলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব না।
তিনি ৫ মার্চ দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন।