গিয়েছিলো কুমারী মেয়ে, প্রবাস থেকে দেশে ফিরল অন্তঃসত্ত্বা হয়ে

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৯:৪৫ পিএম, ১১ মে ২০১৮

কুমারী মেয়ে, জর্দান
সংসারের আর্থিক অনটন কাটাতে মেয়েকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন ভ্যানচালক বাবা। কিন্তু সেই মেয়ে বিদেশের মাটিতে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। কুমারী মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় দেশে ফিরেছে খালি হাতে। অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা খরচ এবং তার অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে পরিবারটি। সামাজিকভাবেও তারা বিপর্যস্ত।

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ওই ভ্যানচালক, তাঁর মেয়ে এবং স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৬ সালের অক্টোবরে স্থানীয় দালাল আবুল কাসেমের মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে জর্দানে যায় সদ্য কৈশোর পার হওয়া মেয়েটি। যাওয়ার পর থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ। মেয়েটি জানায়, জর্দানের রাজধানী আম্মানে বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করেছে খাওয়া চুক্তিতে। কোনো বেতন পায়নি। টেলিফোন না থাকা এবং বাড়ির মোবাইল ফোনের নম্বর ভুলে যাওয়ায় কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি।

প্রায় ১০ মাস পর একটি মার্কেটে তার সঙ্গে পরিচয় হয় সিংগাইরের চরচামটা গ্রামের পপি ওরফে রাবেয়ার সঙ্গে। একই এলাকার মানুষ পেয়ে মেয়েটি সব কিছু খুলে বলে রাবেয়াকে। চাকরি দেওয়ার কথা বলে রাবেয়া মেয়েটিকে তার সঙ্গে যেতে বলে। সে রাজি হয়ে যায়। তাকে একটি দোতলা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিচতলায় দুটি ঘরে বাংলাদেশি, ভারতীয়, শ্রীলঙ্কার আরো প্রায় ৩০ জন মেয়ে ছিল।

বাংলাদেশি মেয়েদের কাছ থেকে সে জানতে পারে তাদের দিয়ে যৌনবৃত্তি করানো হয়। রাবেয়ার মাধ্যমে খদ্দেররা যোগাযোগ করে। পছন্দের মেয়েকে খদ্দেরের কাছে পাঠিয়ে দেয় রাবেয়া। এ ছাড়া বাড়ির দোতলায় দুটি ঘরে ছুটির দিন মদের আসর বসানো হয়। সেখানেও যৌনকর্মে বাধ্য করা হয়।

সে জানতে পারে, রাবেয়া প্রায় ১৫ বছর ধরে জর্দানে মেয়েদের দিয়ে এই ব্যবসা পরিচালনা করছে। জর্দানে রাবেয়ার আরেক নাম সোনিয়া। ওই বাড়িতে পৌঁছানোর দুই দিন পরই তাকে এক খদ্দেরের কাছে যেতে বলে। রাজি না হওয়ায় বেদম মারধর করা হয়। বেশ কয়েক দিন নির্যাতনের পর একপর্যায়ে রাজি হতে বাধ্য হয়।

মেয়ের বাবা বলেন, ‘মেয়ের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ করে দেয়নি আবুল কাসেম। এ নিয়ে আমরা সিংগাইর থানায় মামলা করলে পুলিশ কাসেমকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে কাসেম জেলহাজতে রয়েছে। মেয়ে দেশে ফেরত আসার পর রাবেয়ার বিষয়টি আমরা জানতে পারি।’

তিনি রাবেয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। বর্তমানে মেয়ের চিকিৎসা খরচও চালাতে পারছেন না।

এদিকে রাবেয়ার বাড়িতে গিয়ে তার ভাই ও ভাবিকে পাওয়া গেলেও কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে নির্মাণাধীন বাড়িটি রাবেয়ার বলে স্বীকার করেন। রাবেয়ার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)