মঠবাড়িয়ায় এরশাদের জনসমাবেশ : প্রতিহতের ঘোষনা স্বৈর শাসক বিরোধীদের
বিশেষ প্রতিবেদন।। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ মঠবাড়িয়ায় আসছেন। তিনি আজ মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় মঠবাড়িয়া জাতীয় পার্টি আয়োজিত শহরের শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠে এক সমাবেশে বক্তব্য দেবেন।
এ উপলক্ষে পিরোজপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও সদ্য জাতীয় পার্টিতে যোগ দেয়া কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীরা সমাবেশ সফল করার লক্ষে পৌর এলাকাসহ ১১টি ইউনিয়নে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালিয়ে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
শহীদ নূর হোসেনের পৈত্রিক স্থান মঠবাড়িয়া জাপা প্রধান এরশাদের আগমন ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে শহীদ নূর হোসেন স্মৃতি পরিষদ নামে একটি সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়ে সমাবেশ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে । সংগঠনটি তাদেরও সামাজিক যোগাযোগ সাইটে গত কয়েকদিন ধরে শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতি বিজরিত মঠবাড়িয়ায় এরশাদেও মঠবাড়িয়ায় আগমন ঠেকাতে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালায়। সংগঠনটি এর প্রতিবাদে একটি পোস্টার ও লিফলেট প্রকাশ করে।
তবে স্থানীয় জাতীয় পার্টি জনসভা সফল করতে এলাকায় এলাকায় ডা. ফরাজির নেতৃত্বে কর্মীরা ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় জাতীয় পার্টি ও নূর হোসেন স্মৃতি পরিষদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়ার পৌর শহরে র্যাব, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় শহীদ নূর হোসেন স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমীন রাসেল সাংবাদিকদের বলেন, এরশাদ সাবেক স্বৈর শাসক। গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে গিয়ে মঠবাড়িয়ার কৃতি সন্তান নূর হোসেন শহীদ হন। স্বৈর শাসক এরশাদ এর দায় এড়াতে পারেন না। তাই শহীদ নূর হোসেনের পিতৃভূমি মঠবাড়িয়ায় এরশাদের জনসমাবেশের প্রতিবাদ জানাই। আমরা সচেতন মানুষকে ওই সভা বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি।
এছাড়া জাগো লক্ষ নূর হোসেন সংগঠন শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতি বিজরিত মঠবাড়িয়ায় জনসমাবেশে এরশাদকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।সংগঠনটির সদস্য সচিব মেহেদী হাসান বাবু ফরাজি সাংবাদিকদের বলেন, এরশাদ কিছুতেই শহীদ নূর হোসেন হত্যার দায় এড়াতে পারেন না। মঠবাড়িয়া এ কৃতি সন্তানের স্মৃতিবিজরিত পিতৃভূমিতে সমাবেশে তার ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। তাই জাগো লক্ষ নূর হোসেন সংগঠন এ দাবিতে সোচ্চার।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মঠবাড়িয়া উপজেলা পরিষদে আইশৃঙ্খলা সভায় এমপি ডা. ফরাজির সহধর্মীণী খাদিজা বেগম খুশবু অভিযোগ করেন, এরশাদের পন্ড করতে ও সমাবেশে মানুষ না আসতে উপজেলার আমড়াগাছিয়া, সাপলেজা ও মিরুখালী ইউনিয়নের জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে।
এদিকে এরশাদের আগমনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে একাধিক তোরণ। সমাবেশকে সফল কারার লক্ষে বিভিন্ন স্থানে কর্মীসভায় শহীদ নূর হোসেন স্মৃতি সংসদের সদস্যরা হামলা ও প্রতিবাদের চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । এ ঘটনায় এমপির সমর্থক জাকির হোসেনকে আহত করা হয়। ওই হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের ৩৯নেতা কর্মীকে আসামী করে মঠবাড়িয়া থানায় একটি মামলাও করা হয়।
উপজেলা জাতীয় পার্টি সূত্রে জানাগেছে, সমাবেশে বিরোধী দলীয় নেতা, কো-চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টি রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টি ও সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদের, মহা সচিব জাতীয় পার্টি ও সাবেক মন্ত্রী এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পরিবেশ ও বনমন্ত্রী কাজী ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহামুদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী মজিবুল হক চুন্নু, বিরোধী দলীয় চিপহুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফিরোজ রশিদ, এমপি জিয়া উদ্দিন বাবলু, মশিউর রহমান রাঙ্গা, এ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য অবঃ মেজর খালেদ আক্তারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
সমাবেশে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সদ্য জাতীয় পার্টিতে যোগদানকারী ডা. রুস্তম আলী ফরাজী প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন।
সাংসদ ডা. রুস্তম আলী ফরাজী অভিযোগ করেন, সমাবেশ প্রতিহত পন্ড করতে ও সমাবেশে মানুষ আসতে নিয়েধ করে জাতীয় পার্টির কর্মী সমর্থক ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এছাড়া জাতীয় পার্টির সমাবেশে হামলাও চালানো হয়েছে। তবে সমাবেশ সফল করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম তারিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, জাপা চেয়ারম্যান এরশাদের আগমন ও জনসভা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ সম্পন্ন করতে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আইন শৃংখলা রক্ষায় দেড়শ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ ৬টি পুলিশের মোবাইল টিম বিভিন্ন ইউনিয়নে টহল দেবে।
এনএএস/পাথরঘাটা নিউজ