যে অবস্থায় রোজা ” না রাখা জায়েজ
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ قَالَ الزُّهْرِيُّ وَكَانَ الْفِطْرُ آخِرَ الأَمْرَيْنِ وَإِنَّمَا يُؤْخَذُ مِنْ أَمْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالآخِرِ فَالآخِرِ . قَالَ الزُّهْرِيُّ فَصَبَّحَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَكَّةَ لِثَلاَثَ عَشْرَةَ لَيْلَةً خَلَتْ مِنْ رَمَضَانَ .
মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহমাতুল্লাহ আলাইহি) যুহরি (রহমাতুল্লাহ আলাইহি) থেকে এ সনদের সাথে বর্ণনা করেছেন। যুহরী (রহমাতুল্লাহ আলাইহি) বলেন, (সফরে) সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন না করা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সর্বশেষ কাজ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শেষোক্ত কাজকেই গ্রহণ করা হতো। তিনি বলেন, রমযানের তের দিন অতিবাহিত হবার পর ভোরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা প্রবেশ করেন। (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং- ২৪৭৭,ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ كُنَّا نُسَافِرُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي رَمَضَانَ فَمَا يَعِيبُ عَلَى الصَّائِمِ صَوْمَهُ وَلاَ عَلَى الْمُفْطِرِ إِفْطَارَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ সাঈদ খুদরী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে রামাযান মাসে সফর করেছি। কিন্তু সফরে সিয়াম (রোজা) পালন করার কারণে কোন সায়িমকে কিংবা সিয়াম (রোজা) ভঙ্গ করার কারণে এবং কোন ইফতারকারীকে কোনরূপ দোষারোপ করা হতো না। (সুনানু আত-তিরমিযি, হাদিস নং- ৭১০,ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
কারণ গুলো নিম্নে উল্ল্যেখ করা হলোঃ
১। অসুস্থ ব্যক্তি যদি রোজা রাখার কারণে কোনো শারীরিক গুরুতর ক্ষতি বা মৃত্যুর আশঙ্কাবোধ করে তবে এ অবস্থায় রোজা রাখবে না। সুস্থ হওয়ার পর কাজা করবে। শুধু মনের ধারণায় রোজা রাখা ত্যাগ করা দুরস্ত নয়, বরং যখন কোনো দীন্দার ডাক্তার বলবেন রোজা রাখলে ক্ষতি হবে অথবা নিজের পূর্ব অভিজ্ঞতা কিংবা কোনো লক্ষণ দ্বারা প্রবল ধারণা জন্মে যে, রোজা রাখলে ক্ষতি হবে তখন রোজা ত্যাগ করা যাব।
২। সফর অবস্থায় রোজা না রাখা জায়েজ। মুসাফির অবস্থায় রোজা রাখা কষ্ট না হলে সফরের অবস্থায়ও রোজা রাখা উত্তম। অন্যথায় রোজা না রাখা উত্তম। তবে পরে কাজা করতে হবে।
৩। গর্ভবতী মহিলা এবং স্তন্যদানকারী মহিলা যদি নিজের প্রাণের কিংবা সন্তানের প্রাণের ব্যাপারে শঙ্কিত হয়, তা হলে রোজা না রাখা জায়েজ, তবে পরে কাজা করে নেবে।
৪। মহিলাদের হায়েজ ও নেফাস অবস্থায় রোজা রাখা জায়েজ নয়। রাতে হায়েজ ও নেফাস হতে পবিত্রতা লাভ করলে গোসল না করলেও পরবর্তী রোজা রাখা যাবে। সুবহ সাদিকের পর ঋতু বন্ধ হলে ঐ দিনের রোজা রাখবে না। তবে পানাহার থেকে বিরত থাকবে।
৫। কেউ দিনের বেলায় মুসলমান হলে কিংবা বালেগ হলে তার ওপর ঐ দিনের রোজা ফরজ নয়। তবে দিনের বেলা পানাহার করা থেকে বিরত থাকবে।
৬। অতিবৃদ্ধ হওয়ার কারণে যে ব্যক্তি রোজা রাখতে অক্ষম তার জন্য রোজা না রাখা জায়েজ। প্রতিটি রোজার বিনিময়ে সে একজন মিসকিনকে সাদাকায়ে ফিতর পরিমাণ খাদ্য প্রদান করবে অথবা দু’বেলা পেট ভরে খাওয়াবে। খাদ্য দেয়ার পরিবর্তে এর মূল্য দেয়াও জায়েজ।
সূত্রঃ ১। বুক অব ইসলামিক নলেজ, ইকবাল কবীর মোহন