আমি ছোটবেলা থেকেই মিঠুন দা’কে ফলো করি: ওমর সানী
অনেকের ক্ষেত্রে আমি শুনেছি যে চলচ্চিত্রে আসতে তাকে অনেক স্ট্রাগল করতে হয়েছে। তার মা রাজি না, বাবা রাজি না। কিন্তু আমার পরিবার থেকে আমি বোধহয় একমাত্র ভাগ্যবান একটি ছেলে যার বাবা চাইতো ছেলে যেনো নায়ক হয়! আমার বাবা প্রচুর হিন্দি ছবি দেখতেন। দিলীপ জ্বী, সায়রা বানু, দেবানন্দ, নাসিম বানু তাদের ছবি দেখতেন। তখন তিনি ভাবতেন, আমার ছেলে দিলীপ কুমারের মতো নায়ক হবে। আমার মা, তিনিও চাইতেন আমার ছেলেটা নায়ক হোক! শুধু বাবা মা নন, আমার ভাই-বোন সবাই চাইতো যেনো আমি নায়ক হই।
নিজের নায়ক হয়ে উঠার পেছনের কাহিনি বলতে গিয়ে এভাবেই বলছিলেন নব্বই দশকের তুমুল জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানী।
৬ মে(রবিবার) এই চলচ্চিত্র অভিনেতার জন্মদিন। এই বিশেষ দিন উপলক্ষ্যে তার একদিন আগেই অনন্যা রুমার প্রযোজনায় চ্যানেল আইয়ের নিয়মিত আয়োজন ‘তারকা কথন’ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তিনি। দিলরুবা সাথীর উপস্থপানায় সরাসরি এই অনুষ্ঠানে ওমর সানী কথা বলেন ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার, দাম্পত্য জীবন, বর্তমান চলচ্চিত্রের সার্বিক বিষয় নিয়ে।
চলচ্চিত্রে পদার্পনের সময়ের কথা ভুলেননি এই নায়ক। জানান, আমি যে সময় চলচ্চিত্রে আসছি সেসময় দশ বারোজন তারকা ছিলেন ইন্ডাস্ট্রি, যারা নিয়মিত হিট সিনেমা উপহার দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে থেকে নতুন হিসেবে নিজের জায়গা করে নেয়া কীভাবে সম্ভব সেটা নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু উপর ওয়ালার ইচ্ছা আর ফিল্মের মানুষের সহায়তা আর দর্শকের ভালোবাসায় আমি নিজের অবস্থান তৈরি করতে পেরেছি।
নব্বই দশকে টানা সুপার হিট ছবি উপহার দিয়েছিলেন সানী। কিন্তু গেল দশকের শুরুতেই হঠাৎ সিনেমা থেকে ডুব দেন এই নায়ক। বেশকিছুদিন পর ফিরলেন পর্দায়। তবে নায়ক হিসেবে নয়, খলনায়ক হিসেবে! বেশ কয়েকটা সিনেমাও করলেন। কিন্তু আবার বন্ধ! খল অভিনেতা হিসেবে কেনো অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছেন না? এমন প্রশ্নেরও সুরাহা করেন কুলি খ্যাত এই নায়ক।
বলেন, একমাত্র মেয়ের ইচ্ছাতেই ভিলেনের চরিত্র আর করছেন না। ছোট মানুষ, পর্দায় আমার এমন চরিত্র মেনে নিতে পারে না মেয়েটা। আর ভিলেনের চরিত্রে কোনো ভ্যারিয়েশনও নাই। একঘুয়েমিতায় পূর্ণ। তাই ভাবলাম, এটা আমার বন্ধু মিশা সওদাগরই করুক!
সিনেমাকে ডিরেক্টরিয়াল মিডিয়া মনে করেন এই চিত্রনায়ক। শিগগির ফিরতে পারেন পরিচালনায়ও। সেই ইঙ্গিত ছিলো তার কথায়ও। তবে সিনেমা নির্মাণের আগে তিনি চান, ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে অস্থিরতা কমুক। এরপর সিনেমা নির্মাণে আসবেন তিনি।
কথায় কথায় শাকিবের প্রশংসাও করলেন তিনি। বললেন: আর্টিস্টের কোনো ক্ষমতা নাই একটা সিনেমা হিট বা সুপার হিট করার। এর পুরো কৃতিত্ব একজন নির্মাতার। তবে আর্টিস্টের মধ্যে একমাত্র শাকিব খান ছাড়া হিট দিতে পারে এমন আর্টিস্ট নাই। এই মুহূর্তে এই দেশে একটি সিনেমা হিট হতে পারে একটি মানুষের জন্য, সেটা হচ্ছে ওয়ানলি ওয়ান শাকিব খান। তাকে ছাড়া এই মুহূর্তে বাংলাদেশের কোনো আর্টিস্ট বলতে পারবে না, আমি হিট/সুপার হিট ছবি উপহার দিতে পারবো।
জীবনে কাকে সবচেয়ে বেশি ফলো করেন?-প্রশ্নে এই নায়ক বলেন: আমি ছোটবেলা থেকেই মিঠুন দা’কে ফলো করি। আসলে আমার দেশি ভাইতো! তিনিও আমার মতো বরিশালের। উনার সাথে আমি কথাও বলেছি। আর বাংলাদেশে আমি একটা মানুষকে ভীষণভাবে ফলো করি। তিনি হচ্ছেন শাবানা আপু।