তরুণীর ইজ্জতের দাম ২৫ হাজার টাকা!
মাদারীপুর সদর উপজেলার উত্তর দুধখালী গ্রামের এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আর ধর্ষণের ওই ঘটনাকে দফারফা করতে জোরপূর্বক সালিশ বৈঠক করে ওই তরুণীর পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি ওই তরুণীর পরিবারকে কিছুদিনের জন্য এলাকা ছেড়ে অন্যত্র থাকার কথা বলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র জানা যায়, সোমবার রাতে উত্তর দুধখালী গ্রামের হাজাম পরিবারের এক পান দোকানির মেয়েকে (২২) বাড়ি ফাকা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে একই গ্রামের জৈনদ্দিন খলিফার ছেলে রাসেল খলিফা (২৮)। এসময় ওই তরুণীর গালে ও মুখমন্ডল কামড়ে ক্ষত-বিক্ষতও করে ধর্ষণকারী। ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার সকালে ওই নির্যাতিতা তরুণী তার মায়ের সাথে থানায় মামলা দায়েরের জন্য আসে। কিন্তু এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল থানায় এসে ওই তরুণী ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক এলাকায় নিয়ে যায়। পরে দুপুরে তড়িঘড়ি করে জেলা পরিষদের এক প্রভাবশালী সদস্যের নেতৃত্বে একটি বাড়িতে সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে ধর্ষণকারী রাসেল খলিফাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর টাকা দেয়া শেষে প্রভাবশালীরা ওই তরুণীকে তার পরিবারসহ কিছুদিন এলাকা ছেড়ে অন্যত্র থাকার নির্দেশ দেয়।
এই ঘটনার পর আজ বুধবার (২ এপ্রিল) থেকে ওই নির্যাতিতা তরুণী ও তার পরিবারের লোকজনের কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এই ধরনের একটি ঘটনা সালিশে মীমাংসা করায় এলাকার মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদারীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মোহাম্মদ আবু নাইম জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই এলাকায় গিয়ে ওই তরুণী ও তার পরিবারের সাথে কথা বলে। ওই তরুণীর পরিবার এখন বলছে যে, গাছের আম পারা নিয়ে বিরোধ হয়েছিল। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোন আইনগত ব্যবস্থার দাবি না থাকায় পুলিশ কোন ভূমিকা পালন করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদারীপুর মডেল থানার ওসি কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনা সত্য হলে আবশ্যই মামলা হবে।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন বলেন, কোন তরুণী নির্যাতনের ঘটনা সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে ওই পরিবার চাইলে থানায় মামলা দায়ের করতে পারেন। আমার তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা করব।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২ মে