ধর্ষণ, হত্যা, অপহরন, চাদাবাজীসহ সকল অপকর্মে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ: অ্যাডঃ সুনাম দেবনাথ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরগুনা: ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে বরগুনা ১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, নৌকা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরোধিতা করছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ছোয়ায় বরগুনায় বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম সাধিত হলে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্দনে জেলা ছাত্রলীগ এসকল উন্নয়ন দেখেও না দেখার ভান করছেন। রোববার দুপুরে বরগুনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ এ অভিযোগ করেন।
এসময় যুবনেতা আরিফ খান, শাওন তালুকদার, সাইমুল ইসলাম রাব্বি, বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আক্তারুজ্জামান রকিব, বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ নেতা অনিমেষ হাওলাদার সহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের খামখেয়ালীপনায় জেলা ছাত্রলীগ আজ ব্যক্তিগত সংগঠণে পরিনত হয়েছে। ধর্ষণ, হত্যা, অপহরন, চাদাবাজীসহ সকল অপকর্মে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ ও এর বিভিন্ন ইউনিট কমিটির সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। অছাত্র, বিবাহিত ও মাদক ব্যবসায়িদের দিয়ে চলছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগও এর বিভিন্ন ইউনিট কমিটি। ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ আজ ধ্বংস প্রায়। বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ আজ জামায়াত বিএনপির আখড়া, সংগঠন পরিচালনায় নেই কোন গঠনতান্ত্রিক ধারা। আওয়ামীলীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্বান্ত অমান্য করে বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের ছেলেকে ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত করায় আজ ছাত্রলীগের মধ্যে এই বিশৃঙ্খলা। যা মূলদল আওয়ামীলীগের মধ্যেও প্রভাব বিস্তার করছে। সংগঠণকে বানিয়ে ফেলেছে পৈতৃক সম্পত্তি। ডাকাত, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী, শিবির, জামায়াত, বিএনপি আজ ছাত্রলীগের কাধে ভর করে প্রভাব বিস্তার করছে। তারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নিজেদের সুবিধামত ছাত্রলীগকে ব্যবহার করছে।
গত ২৮ এপ্রিল বরগুনা প্রেসক্লাবে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে কতিপয় ব্যক্তি আমার নামে যে মিথ্যা, অসত্য, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ সম্মেলন করেছে তার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদকের ফেন্সিডিল খাওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিলো। যাতে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগসহ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের সম্মান খুন্ন হয়েছে। এছাড়াও আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ মাহাবুবুল ইসলাম ০৫ কেজি গাঁজা সহ র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ দিন জেল হাজতে ছিল।
এসময় তিনি আরো বলেন, একজন মাদক ব্যবসায়ী কি করে ছাত্রলীগের মতো একটা ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের সভাপতি হয় সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। সেই সাথে তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ সরোয়ার হোসেন স্বপন এর বাবা বেলায়েত হোসেন পনু জোমাদ্দার তালতলী থানা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ছিলেন। সভাপতির আপন মামাতো ভাই সবুজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামী। আপন ফুফাতো ভাই তালতলী উপজেলা জামায়াতের সাধারন স¤পাদক। কিন্তু অবাক করার বিষয় তারাই আবার আমার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী বলে সংবাদ সম্মেলন করেন। কোন প্রমান ছাড়া শুধু আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মাদক স¤্রাট বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। যেখানে ছাত্রলীগের মতো ঐতিহ্যবাহী একটি সংগঠনের সাধারন সম্পাদক ফেনসিডিল সেবন করেন সেখানে কি করে তারাই আবার অন্য একজনকে মাদকস¤্রাট বলে আখ্যা দেন এটা আমার বোধগম্য নয়। তবে কি এদের অবৈধ মাদক ব্যবসা ও কুকর্মকে ঢাকতেই আমার বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ২৫ বছর ধরে বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। জনগণের রায় নিয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। সংসদ সদস্য হয়ে নৌ পরিবহন ও খাদ্য মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। তাকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বলা হয়েছে জনবিচ্ছিন্ন নেতা। এটা বরগুনাবাসীর কাছে সত্যিই হাস্যকর। সেই সাথে বার বার নির্বাচিত একজন সংসদ সদস্যকে হেয় প্রতিপন্ন করে কতিপয় ব্যক্তির স্বার্থ উদ্ধারের যে পায়তারা চলছে তা নৌকার পরিপন্থি বলেই মনে করি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে নৌকা আজ অপ্রতিদ্ধন্দি। তিনি জনগণের মানস কন্যা। বরগুনা ১ আসনে তিনি বার বার বর্তমান নির্বাচিত সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভুর উপরে আস্থা রেখেছেন। আর জনগণও তার আস্থার মর্যাদা দিয়ে গেছেন শতস্ফুর্ত ভাবে। কিন্তু আওয়ামীলীগের মধ্যেই কিছু স্বার্থান্বেষী আজ সংসদ সদস্যের বিরোধীতা করে দল পাকিয়েছেন। তাহলে প্রশ্ন থেকে যায় তারা কি শমভু তথা নৌকা পক্ষান্তরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরোধীতা করছেন না? তারা নৌকা তথা আওয়ামীলীগ সরকারকে ডুবিয়ে এমন কি জনবান্ধব নেতার নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চান সেটা জনগণের প্রশ্ন।
এসময় তিনি বলেন, ছাত্রলীগের একাংশের সংবাদ সম্মেলনে মাদক ব্যবসায়ী প্রিন্স, নয়ন ও পিআইও ই¯্রাফিলকে আমার সহচর বলা হয়েছে। এবং আমার মদদেই এরা মাদকব্যবসা করেন বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাহলে এরা তো একাধিকবার পুলিশের কাছে ধরাও পড়েছে তারা কি কখনো পুলিশকে বলেছে আমি এদের সাথে জড়িত। যদি না বলে থাকে কিসের ভিত্তিতে তারা আমাকে মাদক স¤্রাট বলে আখ্যা দিচ্ছেন। তবে এটা নিজের অপকর্ম ঢাকার পায়তারা। নাকি নৌকার বিরুদ্ধে গভীর কোন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রাজনীতি কারও একার স¤পদ নয়। কিংবা রাজনীতি নয় শুকনার উপর নৌকা চালানো। মেধা ও মনন নিয়ে মাঠে আসুন আমরা প্রস্তুত। আমরা রাজপথে নৌকাকে জিতিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের জবাব দেব। লাঙল গরু দিয়ে হালচাষ হয় না ভেবে যারা টাফির স্মরনাপন্ন হচ্ছেন তাদেরকে বলি অন্যের টাকার টাফি অধিক ব্যবহারে অকেজো হয়ে পড়তে পারে কিন্তু লাঙল জোয়াল কখনো বেঈমান হয় না। আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্রকে রুখে দিয়ে নৌকার বিজয়কে অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, ২৮ এপ্রিল শনিবার বরগুনা প্রেসক্লাবে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদক বর্তমান সংসদ সদস্যকে জনবিচ্ছিন্ন এমপি ও সাংসদের ছেলে জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সুনাম দেবনাথকে মাদক স¤্রাট বলে আখ্যায়িত করেন। তার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. সুনাম দেবনাথ।