রাস্তায় বিদ্যুৎপৃষ্ট সেই নারীর মিলেছে খোজঃ উদ্ধারে জনতার কর্মকাণ্ড
রাজধানী ঢাকা দেশের সবচেয়ে বড় আর সবচেয়ে আধুনিক শহর হলেও এখানে পদে পদে ছড়িয়ে আছে বিপদ। সন্ত্রাস, ছিনতাই, মাদকের পাশাপাশি জলাবদ্ধতাও হয়ে উঠে মানুষের মৃত্যুর কারণ। সবাই জানেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই ঢাকার বেশিরভাগ রাস্তা পানির নিচে চলে যায়। এতে যেমন ম্যানহোলে পড়ার ভয় থাকে, তেমনই থাকে বিদ্যুৎপৃষ্ট হওয়ার আশংকাও। তেমনই এক ঘটনার ভিডিও এখন সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল।
রাজধানীর পুরনো ঢাকার ওয়ারী থানার কাছেই এক গলিতে আজ রবিবারের তীব্র বর্ষণে পানি জমে গিয়েছিল। সেই পানিতে কোনোভাবে এসে পড়ে বিদ্যুতের তার। ঠিক ওই সময় দুজন নারী আর একজন পুরুষ ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হন। স্থানীয় লোকজন পুরুষ দুজনকে উদ্ধার করার পর নারীটিকে উদ্ধার করার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল সাইটে। পরে জানা গেছে এদের মাঝ থেকে একজন জিন্নাহ আলী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি দোকানের বন্ধ শাটারে হেলান দিয়ে রাস্তার জলে পড়ে আছেন ওই নারী। তাকে কিছু লোকজন মিলে বাঁশ দিয়ে সরানোর চেষ্টা করছে। এই রুদ্ধশ্বাস মুহূর্ত আবার ভিডিও করার লোভও ছাড়তে পারেননি কেউ কেউ। শেষ পর্যন্ত ওই নারীকে শাটার থেকে সরিয়ে আনতে সক্ষম হয় লোকজন। তারপর তাকে কাঁধে করে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত নারীটিকে মাথা, ঘাড়ে বেশ আঘাত পেতে হয়েছে।
কোনো মানুষ বিদ্যুতায়িত হলে তাকে স্পর্শ করা মানে নিশ্চিত মৃত্যু। এজন্য সবার আগে বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দিতে হবে। সেটা যদি সম্ভব না হয়, তবে শুকনো কিছু দিয়ে বিদ্যুতের তার বা উৎস থেকে মানুষটিকে সরিয়ে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, যে বস্তুটি দিয়ে সরানোর কাজটি করবেন, সেটি বিদ্যুৎ অপরিবাহী হতে হবে। দড়ি, প্লাস্টিকের বস্তু, বাঁশ, কাঠ এক্ষেত্রে কার্যকর। ঘটনাটি যদি পানিতে ঘটে তবে আরও বিপদ। কারণ পানি বিদ্যুৎ সুপরিবাহী। এক্ষেত্রে খুব সতর্কতার সঙ্গে বিদ্যুতের উৎস থেকে মানুষটিকে সরাতে হবে। তবে সব কথার বড় কথা হলো, এই কাজটা করতে হবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে।
প্রসঙ্গত, আমাদের মাঝে কিছু ভুল ধারণা আছে। বিদ্যুৎপৃষ্ট ব্যক্তির শরীরে কখনই আঘাত করবেন না। এতে বিন্দুমাত্র উপকার হয় না বরং ভীষণ ভীষণ ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। বিদ্যুৎপৃষ্ট মানুষকে বাঁচানোর সাথে তাকে আঘাত করার কোনো সম্পর্ক নেই। মানুষটিকে যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুতের সংস্পর্শ থেকে ছাড়িয়ে নেওয়াই তখন প্রধান কাজ। সতর্ক থাকুন। বিপদে একে অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসতেই হবে।