নারী ও অাগামী
রনি হালদার রুদ্র
জীবনকে যদি বৃক্ষের সাথে তুলনা করা হয় তবে মূল ও কান্ড বলা উচিত নারী ও পুরুষকে। এককথায় পরিপূরক বলাটাই হয়তো শ্রেয়। ইতিপূর্বে জ্ঞাত হয়েছি হৃদয়ের প্রায় সকল হতাশার নাকি অাশাব্যঞ্জক উত্তর পাওয়া যায় যেখানে তা হয়তো নারী সত্ত্বা। যার উপস্থিতি হৃদয়ের সুবিশাল পীড়াকেও লঘু করতে পারে নিমিষে, বিষাদাচ্ছন্ন হৃদয়কে দিতে পারে অপার সন্তোষ। তা হোক সে প্রেমিকা বা স্ত্রী কিংবা গণিকা। যার ব্যাথা যে প্রকারে তার নিরসনের উপায়ও উচিত রূপেই পাওয়া যায় হয়তো নারীর নৈকট্যলাভে। সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকেই জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এই নারী। নাড়ির টানও যে এই নারীর সঙ্গেই। কোমলতা যার স্বভাবগত ধর্ম সেই হলো নারী সত্ত্বা। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে তার কোমলতাকে দুর্বলতা বানিয়ে দিয়েছি অামরা,অামাদের সমাজ, অামাদের সংস্কৃতি ও সভ্যতা এবং অামাদের নারীবাদী লেখিকারা। শক্তির গৌরবে তার সাথে যুদ্ধ করেছি প্রতিনিয়ত। কিন্তু অামরা কি ভেবে দেখেছি তাদের অপেক্ষা সত্যিই বেশি শক্তিমান কিনা অামরা? নাকি এটা অামাদের নিজস্ব ধারণা।
শক্তির বিচার্য বিষয় কি?
যদি সহনশীলতার প্রশ্ন অাসে তবে নারী বেশি সহনশীল,যদি কষ্ট সহ্য করার কথায় অাসি তবে নারী বেশি কষ্টধারণ করতে পারে। তার মাতৃত্ব-ই ইহা প্রমাণ করে। যদি জৈবিক শক্তির প্রশ্ন অাসে তবে নারীর মতো তাপ ধারণের ক্ষমতা পুরুষের নেই।
তবে কে শক্তিমান?
যথাযথ বিচার পাঠক করবে তাই হয়তো উত্তম।
শারীরিক ক্ষুধা চরিতার্থ করার জন্য ভুলেই গেছি অামাদের উৎস কোথায়!অাবার অামাদের পরিণত যৌবনের সমাপ্তি-ই বা কোথায়! অামার অামিকে যেখানে গোপন রাখার কথা, সেখানে অামি দুঃধ্বর্ষ মানব হয়েছি। হিংস্র হয়েছি মানবীর কাছে। হয়ে উঠেছি প্রতিনিয়ত তার ভয়ের কারণ, অসন্তোষের বীজ।
পরিণামে সেও তার ধৈর্যের সীমাকে বেধে রাখতে পারলো না। পরিণাম হলো অধিকার অাদায়ের লড়াইয়ের।অার কেনই-বা তা হবে না?
অামাদের অাইন,সমাজ ব্যবস্থা, নারীবাদী উগ্র লেখালেখি হয়তো তার জন্য দায়ী, তাই নয় কি?
যাদের সান্নিধ্য ছিলো মধূময় স্নিগ্ধ তাদের সাথে মনেহয় অাজ অাজন্ম কালের শত্রুতা, বৈরিতা।দিনরাত্রির মতো বিপরীত নারী ও পুরুষ এই অাধুনিক একবিংশ শতাব্দীতে। এটা কি কোনভাবেই যথোচিত,না মানা সম্ভব?
অধিকারের প্রশ্ন উঠলেই উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর মত অবস্থা হয় নারী-পুরুষের।
এই অবস্থা কি অামাদের সৃষ্ট নয়?
এমন অবস্থা কি অাগামী সমাজ তথা নারীদেরকে শোষক হতে সাহায্য করবে না?
অাবার অধিকতর নারীবাদী লেখিকারাও অাগামীর নারীদের হিংস্র ও নারীত্ব বিহীন করায় কম দায়ী নয়। অধিকারের কথা বলতে বলতে অনেকে নারীকে পুরুষের মতো অাচার-অাচরণ করতে ঠেলে দিচ্ছে। স্রষ্টার সুনিপুণ সৃষ্টিতে যেমন নারী ও পুরুষের অাদলে পার্থক্য। তেমনি তাদের অাভূষণ, চলাফেরা,অাচার-অাচরণও পার্থক্যের দাবী রাখে। কিন্তু নারীবাদী কিছু লেখিকা এই মর্মার্থ ভুলে পুরুষ হওয়ার প্রতিযোগীতায় নাম লেখাতে নারীদেরকে উৎসাহ দিচ্ছেন।
একবিংশ শতাব্দীর নারীবাদী তরতাজা লেখিকা “তসলিমা নাসরিণের “নামটা এক্ষেত্রে বলাই যায়। তিনি রাস্তায় দাড়িয়ে নারীদের প্রাকৃতির সাড়া দেয়ার কথা বলেছেন।
শোধ উপন্যাসে নারীর শারীরিক ক্ষুধাকে ভালোবাসার উর্ধ্বে স্থান দিয়েছেন। পুরুষ(অর্থাৎ স্বামী) রতিক্রিয়া না করলে তার ক্ষুধা নিবৃত্ত করতে পরপুরুষের দ্বারে যেতে বলেছেন।
এটা কি নারীর যথোচিত কাজ?
এই মতবাদ ও চিন্তাধারাগুলো কি মোটেই সুস্থ স্বাভাবিক মস্তিষ্কের?
স্বয়ং বিচার করুন।
এদের লেখায় অনুপ্রাণিত হয়ে হয়তো অনেক সংসার ভেঙেছে,হয়তো কারো জীবন থেমে গেছে বিষাদের অচিনপুরে। কমে গ্যাছে ভালোবাসার সখ্যতা।
কিন্তু এটা কি যথোচিত?
নারী ও পুরুষ একাত্মতা প্রকাশ করলে কি পৃথিবী অারো সুন্দর হবে না? অারো শ্রী বৃদ্ধি পাবে নাকি কিছু কিছু সম্পর্ক??
অামার হৃদয় বলে……
“নারী তুমি মাতা হও,অামি হবো পিতা
জ্বেলে দেবো যত অাছে অসত্যের চিতা।”
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১৭ এপ্রিল