ছাত্রলীগ নেত্রী এশা শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত, গলায় জুতার মালা (ভিডিও সহ)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হলের এক ছাত্রীকে নির্যাতনের প্রতিবাদে ছাত্রলীগ নেত্রী ইশরাত জাহান এশার গলায় জুতার মালা পরিয়ে শাস্তি দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরুর পর পরই তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয় এশাকে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ছাত্রী জানান, গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে এশা হলের তিন ছাত্রীকে একটি কক্ষে ডেকে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের শিকার ছাত্রীদের চিৎকার শুনে সেখানে যান উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মোর্শেদা খানম। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মোর্শেদা কক্ষের জানালার কাচে লাথি মারলে তার পা কেটে যায়।
খবর পেয়ে অন্য ছাত্রীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এশাকে মারধর করে তাকে আটকে রাখেন। ছাত্রী নির্যাতন করায় তার বহিষ্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্রীরা তাদের কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন। দিবাগত রাত তিনটা ৫০ মিনিটে সুফিয়া কামাল হলের ভেতরে ছাত্রীরা ওই ছাত্রলীগ নেত্রীর কুশপত্তলিকা পুড়িয়ে বিক্ষোভ করে।
ছাত্রী নির্যাতনের খবর ও ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে হাজারো শিক্ষার্থী কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনে জড়ো হন। এরপর আজ বুধবার ভোরে হল থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশাকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা।
মঙ্গলবার দিনগত রাতে হলের কয়েকজন ছাত্রীকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে এশার বিরুদ্ধে।
বুধবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন সেখানে বলেন, ‘সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রলীগ সভাপতি মঙ্গলবার রাতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের মারধর করেছে। সে এর আগেও ছাত্রীদের মারধর করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।’
অন্যদিকে সকালের সংবাদ সম্মেলনে হাসান আল মামুন বলেন, ‘এরপরও যদি কেউ আন্দোলনকারীদের এরকম মারধর করে, সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ জানাতে হবে। সবাইকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। কিছু অনুপ্রবেশকারী এই আন্দোলন বানচাল করার চেষ্টা করছে। যেখানে সেখানে তারা সহিংসতা করার চেষ্টা করছে। সাংবাদিক ভাইদের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেছে ও তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি।’ সাংবাদিকদেরও অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তারা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন অনির্দিষ্টকাল চলবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করবো।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে চারুকলা ও টিএসসিতে অবস্থান করছেন আন্দোলনকারীরা।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/১১ এপ্রিল