স্কুল লাইব্রেরীতে ছাত্রলীগ নেতা শিক্ষিকাকে ধর্ষণ
ভোলা মনপুরা উপজেলায় স্কুল চলাকালীন সময়ে শিক্ষিকাকে আটকে ধর্ষণ করেছে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনাম আহমেদ। এমনটাই অভিযোগ করেছেন ধর্ষিতা স্কুল শিক্ষিকা। ওই স্কুল শিক্ষিকা বিচার পেতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সোমবার (০২ এপ্রিল) একই সাথে বিচারের দাবিতে মনপুরা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শিক্ষক নেতারা বলে নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। এই আলোচিত ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩১ মার্চ সকাল সোয়া ৯টার দিকে।
ওদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছেন সাবেক ইউপি সদস্য ও অভিযুক্ত ধর্ষক এনাম আহমেদের পিতা জাহাঙ্গীর হোসেন।
ধর্ষিতা দাবি করেছেন, ঘটনার বিষয়টি জানাজানি হলে এনাম আত্মগোপনে চলে যায়। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে হুমকি দিচ্ছে।
উপজেলার ৪ নম্বর দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের হারিছ-রাবেয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধর্ষিত ওই সহকারী শিক্ষিকা জানান, অন্যান্য দিনের মত ৩১ মার্চ সকাল ৯টার দিকে তিনি স্কুলে প্রবেশ করে শিক্ষকদের বসার নির্ধারিত কক্ষ (লাইব্রেরী) খুলে বসেন। এসময়ে এনাম কক্ষে প্রবেশ করে হঠাৎ দরজা আটকে দেয় এবং তাকে ধর্ষণ করে। প্রথম অবস্থায় ডাক-চিৎকার দিলে কেউ শুনতে পায়নি। তবে একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি করে বের হয়ে বাইরে এসে চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে। ততক্ষণে ছাত্রলীগ নেতা এনাম ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম চৌধুরী পাপন বলেন, এনাম ছাত্রলীগের সহ-সভপতি। তবে তার বিরুদ্ধে ধর্ষেণের এমন অভিযোগ আমার জানা নেই।
অভিযুক্ত ধর্ষক এনাম আহমেদের বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, যে শিক্ষিকা এমন অভিযোগ করেছেন তার বাড়ি মূলত স্কুল থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে। অনেকদিন ধরে বদলী হতে চেষ্টা চালাচ্ছিল। কোন উপায়ে না পেরে এখন নতুন নাটক সাজিয়েছেন।
জাহাঙ্গীর মেম্বর দাবি করেন- ওই দিন ওই শিক্ষিকা আগে এসে স্কুলের বিস্কুট নিয়ে যাচ্ছিল। তা দেখে ফেলায় তার প্রতিবাদ করে এনাম। ওই ঘটনা ধামাচাপা দিতে ধর্ষণের অভিযোগ তুলছে। এনাম কেন স্কুলের সিঁড়ির রুম দখল করে রাখছে এমন প্রশ্ন করা হলে এই আ’লীগ নেতা বলেন, আমার ঘর ভেঙে নতুন ঘর তুলছি। তাই কিছু দিনের জন্য সেখানে থাকছে।
ধর্ষিত স্কুল শিক্ষকা বলেন- ঘটনার পরপরই শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে অবহিত করেছি। তারা লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছে। আমি সেটাই করেছি। এখন তারা যে সিদ্ধান্ত নেয় আমি সেটাই মেনে নেব। তবে আমি এমন ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সবাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে। এখন মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২ এপ্রিল