৩ মাসে ১৮৭ নারী ধর্ষিত
অনলাইন ডেস্কঃ সারা দেশে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে ১৮৭ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ধর্ষণের পর ১৯ নারীকে হত্যা করা হয়েছে। দুজন ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে আরো ২১ নারীর ওপর। এর বাইরে যৌন হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন ২৭ নারী। যৌন হয়রানির কারণে আত্মহত্যা করেছেন ১ নারী।
যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন দুজন পুরুষ। এছাড়া লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন আরো ৩২ নারী-পুরুষ।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ত্রৈমাসিক পরিসংখ্যানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক হেফাজতে ও ক্রসফায়ারে আরো ৪৬ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে র্যাবের ক্রসফায়ারে ১৬ জন, পুলিশের ক্রসফায়ারে ১৯ জন, ডিবি পুলিশের ক্রসফায়ারে ৫ জন, নৌ-পুলিশের ক্রসফায়ারে ১ জন, বিজিবির ক্রসফায়ারে ১ জন, ডিবি পুলিশের নির্যাতনে ১ জন ও পুলিশের গুলিতে ২ জন মারা গেছেন।
পাশাপাশি কারা হেফাজতে তিন মাসে মারা গেছেন ২৫ জন। এদের মধ্যে ১১ জন কয়েদি ও ১৪ জন হাজতি। ১২ই মার্চ কারা হেফাজতে মারা যান ছাত্রদল নেতা জাকির হোসেন। পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা ৪ জনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে দুজন ফেরত এসেছেন এবং একজনকে গ্যেপতার দেখানো হয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত তিন মাসে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১০৭ জন নারী। এদের মধ্যে ৭৫ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ১৪ জন নারী। এছাড়া শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৮ জন নারী। যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতনের শিকারে হয়েছেন ৫৫ জন নারী। এদের মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২১ জন। যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ২১ ও একই কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৪ জন নারী। স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন আরো ৯ নারী।
দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশু হত্যা এবং নির্যাতনের সংখ্যা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে আসক। তিন মাসে ৪২২ জন শিশু বিভিন্ন নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। এরমধ্যে ৭১ শিশুকে হত্যা, ২৬ শিশু আত্মহত্যা করেছে। নিখোঁজের পর ২ শিশু এবং বিভিন্ন সময় ২০ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে আরো ৭ শিশুর। এছাড়া একই সময়ে ৬৫ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে নিজ ফ্ল্যাটে সুমন সিকদার নামে এক সাংবাদিকের হাত পা বাধা অবস্থায় গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আসকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরে গণপিটুনিতে মারা গেছেন ১৬ জন। এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন ৩ জন নারী এবং সালিশ ও ফতোয়ার মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আরো ৩ নারী। রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১১ জন এবং আহত হয়েছেন ১৪৮৮ জন। সীমান্তে বিএসএফ নির্যাতনে নিহত হয়েছেন ৩ জন আহত হয়েছেন ৭ জন ও অপহরণের শিকার হয়েছেন আরো ৩ জন। হিন্দু সম্প্রদায়ের ৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, ১৭টি প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দির ও পুজামণ্ডপে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৯ জন
এ এম বি / পাথরঘাটা নিউজ