ফের দাম বেড়েছে চাল ও দেশি পেঁয়াজের

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৬:০০ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

---গত বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা আমদানি সমস্যাসহ নানা অজুহাতে দফায় দফায় চালের দাম বাড়ে। চলতি বছরেও চালের বাজারে স্থিরতা আসেনি। এরইমধ্যে আরেক দফা চালের দাম বেড়েছে।

এবার কেজিপ্রতি ৩ টাকা করে চালের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। এছাড়া খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের। কেজি প্রতি ৫ টাকা বেড়েছে বলে বিক্রেতারা জানায়।

অন্যদিকে, গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে আমদানি করা পেঁয়াজ। অথচ গত সপ্তাহে পেঁয়াজের বাজার দাম কমার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু চলতি সপ্তাহে এর বিপরীত চিত্র দেখা গেলো বাজারে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাড্ডা, মহাখালী ও কারওয়ানবাজারের আশপাশের এলাকা ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। হঠাৎ করে মোকামে দেশি পেঁয়াজের যোগানের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

অন্যদিকে, মূল্য বৃদ্ধির খবর শুনে হতাশ ক্রেতারা। সর্বশেষ পাইকারি বাজারের তথ্য অনুযায়ী, দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ যথাক্রমে ৪৩ ও ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

এদিকে, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫৫ ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। চালের খুচরা বিক্রেতাদের তথ্য অনুযায়ী, কেজিপ্রতি নাজিরশাইল চালের দাম ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৩ টাকায়, ১ নম্বর মিনিকেটের দাম ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫, ২ টাকা বেড়ে সাধারণ মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২, বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ এবং স্বর্ণা ও পারিজা চালের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়।

পেঁয়াজ ও চালের বাজারে ক্রেতারা অস্বস্তিতে থাকলেও সবজির বাজারে ক্রেতাদের জন্য স্বস্তি। প্রতি কেজি টমেটো ১০-১৫, পেঁপে ২০, বেগুন ৪০, সিম দেশি ৪০, মুলা ১৫, কাঁচামরিচ ৫৫, ধনিয়াপাতা ৬০, লাউ প্রতি পিস ৩৫, গাজর ৬০, আলু ২০, প্রতি পিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি ১৫, লাল শাক, পালং শাক ও ডাটা শাক দুই আঁটি ১৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, দেশি রসুন ৮০, আমদানি করা রসুন ৮৫, চিনি ৫৫-৬০, দেশি মসুর ডাল ১০০-১২০ ও আমদানি করা মসুর ডাল ৬০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে। মাছ ও মাংসের দামও রয়েছে গত সপ্তাহের মতোই। মাছের সর্বশেষ বাজার খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি কাতল মাছ ২২০, পাঙ্গাশ ১২০, রুই ২৩০-২৮০, সিলভারকার্প ১৩০, তেলাপিয়া ১৩০, শিং ৪০০ ও চিংড়ি ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪০০-৪৫০, খাসির মাংস ৭০০-৭৫০ ও ব্রয়লার মুরগি ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সোনালি মুরগি প্রতি পিস সাইজ অনুযায়ী ১৫০-২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারের বিক্রেতারা এই বাড়তি দামের জন্য খুচরা বিক্রেতাদের দায়ী করেছেন।

কারওয়ানবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, দেশি পেঁয়াজের যোগানে কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। তবে এর প্রভাব দামে এখনও পড়েনি।

তবে খুচরা বিক্রেতারা এই কথা শোনার পরেই কেজি প্রতি ৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন। পাইকারি বাজারে বাড়েনি। উল্টো পাইকারি বিক্রেতাদের দোষারোপ করলেন খুচরা বিক্রেতারা।

মহাখালী কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতা আবদুল হাকিম বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে বলেই আমরা দাম বাড়িয়েছি। ৪২ টাকায় বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ ৪৫-৪৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

গত বুধবার থেকে দেশি পেঁয়াজ ৪২ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে না।

বাড্ডা কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা ইমরান হোসাইন বলেন, সবজির দাম ঠিকই আছে। কিন্তু পেঁয়াজের দাম ভেবেছিলাম এ সপ্তাহে এসে কমবে। তা না হয়ে আরো বেড়েছে। চালের দামও বেড়েছে। কারওয়ানবাজারের চালের খুচরা বিক্রেতারা জানান, আমন মৌসুম শেষে চাল বাজারে চলে এসেছে অনেক আগে। এখন বোরো মৌসুম আসার অপেক্ষা এবং আমন শেষ হওয়ার মাঝামাঝি সময় চলছে। এই সময়ে চালের দাম সাধারণত কিছুটা বৃদ্ধি পায়। বাড্ডার চাল বিক্রেতা মোকাররম হোসেন বলেন, মোকামে গেলে চাল পাই না। বেশি দামে এখন চাল কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)