দেশে রেলওয়ে কোচ পুনর্নির্মাণে সাশ্রয় ৭৫ কোটি টাকা
।
পুরনো রেলওয়ে কোচ কয়েক দশক চলার পর তা আর চলাচলের উপযোগী থাকে না। এ অবস্থায় কোচগুলোকে ফেলে না দিয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার দক্ষ প্রকৌশলীরা নতুন করে সেগুলো নির্মাণ করছেন। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা যেমন সাশ্রয় হচ্ছে তেমন যাত্রীরাও স্বাচ্ছন্দে ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, নতুন একটি মিটার গেজ রেল কোচের দাম প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। তবে এসব কোচের পুনর্নির্মাণে ব্যয় হয়েছে গড়ে ৮০ লাখ টাকা। প্রতিটি কোচ পুনর্নির্মাণে সাশ্রয় হয়েছে চার কোটি ২০ লাখ টাকা। ১৮টি কোচ নির্মাণে সাশ্রয় হবে ৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার মতো।
সম্প্রতি সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পুনর্নির্মাণ করা মিটার গেজ লাইনের যাত্রীবাহী কোচের পরীক্ষামূলক চলাচল সম্পন্ন হয়েছে। নব্বই দশকে ইরান থেকে ৬৭টি যাত্রীবাহী কোচ আমদানি করা হয়। ইরানের ওয়াগন পার্টস কম্পানি আইআর ওই কোচগুলোর নির্মাতা।
জার্মান প্রযুক্তিতে নির্মিত ওই কোচগুলো দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে মিটার গেজ লাইনে আন্ত নগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনসহ আরো কয়েকটি আন্ত নগর ট্রেন চলত। চলাচলের একপর্যায়ে সেগুলো অযোগ্য হয়ে পড়ে। অচল কোচগুলো স্থান পায় চট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানায়। সেখানে পড়ে থাকা কোচগুলোর মধ্যে কিছু মেরামত করে লোকাল ট্রেনবহরে সংযোজন করে সচল রাখা হয়
অচল কোচগুলো চট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানায় পড়ে ছিল। পরে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় নিয়ে কোচগুলো পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
দেশি প্রকৌশলীদের উদ্যোগে কোচগুলোতে সর্বাধুনিক নানা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরনো আসন ফেলে দিয়ে এবার আরামদায়ক চেয়ার সংযোজন করা হয়েছে। কোচের মেঝেতে মাইল্ড স্টিলের পরিবর্তে ব্যবহার হয়েছে স্টেইনলেস স্টিল। ফ্লোর ম্যাট ব্যবহার করা হয়েছে। আধুনিক লাইট সংযোজন করা হয়েছে।
নবনির্মিত কোচগুলো অসৎ উদ্দেশ্যে চেইন টেনে কেউ থামাতে পারবে না। এ জন্য মান্ধাতা ব্যবস্থার পরিবর্তে অ্যালার্ম চেইন পুলিং কন্ট্রোলার ব্যবহার করা হয়েছে। টয়লেটে আধুনিক কমোড ব্যবহার করা হয়েছে। যাত্রীদের মুঠোফোন ও ল্যাপটপ চার্জের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
পুনর্নির্মাণ শেষে ১৮টি কোচের মধ্যে ১২টি দিয়ে চালু হবে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন। বাকিগুলো রিজার্ভ থাকবে। কোচের বগি আধুনিকায়ন করায় এর গতি ৮০ কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছে। আর বেশি গতিসম্পন্ন এসব কোচ সংযোজিত হলে লালমনি থেকে ঢাকা যাতায়াতে সময় কম লাগবে। অতীতে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার। এবার তার গতি বৃদ্ধি পেলে শিডিউল বিপর্যয়ও এড়ানো যাবে।(সূত্রঃ কালের কন্ঠ)