কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য লাখ টাকা
বগুড়ার শেরপুরে গ্রাম্য শালিসে এক বাক প্রতিবন্ধী কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিশোরীর পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করে রাতের আধারে আপোষের অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের বিশালপুর দক্ষিণ পাড়া গ্রামের কানু চন্দ্র প্রামানিক গত ১০ মার্চ বিকালে তার বাক প্রতিবন্ধি মেয়েকে রেখে বাড়ির সকলে অন্যের জমিতে কাজ করতে যায়। এই সুযোগে প্রতিবেশি মৃত নিতাই চন্দ্র প্রামানিকের ছেলে দীগেন চন্দ্র প্রামানিক (৬৫) বড়িতে ঢুকে প্রতিবন্ধী কিশোরীর মুখ গামছা দিয়ে বেধে ধর্ষণ করে। এ সময় তার পিতা হঠাৎ বাড়িতে আসলে ধর্ষক টের পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
পরে তার মা-বাবা বিষয়টি এলাকার মাতব্বরদের জানালে তারা বিষয়টি গ্রামীণ মালিসের মাধ্যমে মিমাংসা করে দিবে বলে থানায় অভিযোগ করতে বাধা দেয়। ধর্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার মাতব্বররা বিষয়টি নিয়ে কালক্ষেপন করতে থাকে। ১৫ দিন পর ২৬ মার্চ রাতে ভুক্তভোগী পরিবারকে ডেকে এলাকার কথিত মাতব্বররা গোপনে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভূক্তভোগী গরীব বাক প্রতিবন্ধী ধর্ষিত পরিবারটিকে নামমাত্র টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক এলাকাবাসী জানায়, প্রভাবশালী দুশ্চরিত্র ঐ ধর্ষককে বাঁচাতে এলাকার কথিত দালালেরা ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জড়িত রয়েছে। এ ঘটনাটি এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি করেছে।
এ ব্যাপারে প্রতিবন্ধি কিশোরীর পিতা কানু প্রামানিক বলেন, এলাকার মাতব্বর নিরাঞ্জন, দীপক চন্দ্র, প্রান কুমার, পরিতোশ, প্রকাশ চন্দ্র, শম্ভু, চান কুমার ও সুরেশ বিভিন্নভাবে আমাকে চাপ প্রয়োগ করে থানায় অভিযোগ দিতে দেয়নি এবং গত ২৬ মার্চ রাতে বৈঠক করে ধর্ষক দীগেনের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন। তবে এই টাকা এখনো আমাকে দেয়া হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বিপ্লব কুমারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি বিধায় ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২৮ মার্চ